কলকাতা: আবার বাড়ল পেট্রোলের দাম। কলকাতাতে পেট্রোলের দাম সেঞ্চুরির দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে। 


আজ, রবিবার, লিটারপ্রতি ৪১ পয়সা বেড়ে কলকাতায় পেট্রোলের দাম হল ৯৯ টাকা ৪৫ পয়সা। বাড়ল ডিজেলের দামও। লিটারপ্রতি ২৪ পয়সা বেড়ে কলকাতায় ডিজেলের নতুন দাম ৯২ টাকা ২৭ পয়সা। 


ইতিমধ্যে, কলকাতাকে পিছনে ফেলে রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলায় সেঞ্চুরি পার করেছে পেট্রোল। গতকাল, দার্জিলিঙে পেট্রোলের দাম দাঁড়াল লিটারপ্রতি ১০০ টাকা ৪৮ পয়সা। আলিপুরদুয়ারে দাম হয়েছে লিটারে ১০০ টাকা ১০ পয়সা। কোচবিহারে পেট্রোলের দাম ছিল ১০০ টাকা ১ পয়সা। 


এছাড়া, দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলাতেও সেঞ্চুরি করেছে পেট্রোল। পুরুলিয়ায় গতকাল পেট্রোলের দাম ছিল ১০০টাকা ৫ পয়সা। 
কৃষ্ণনগরে পেট্রোলের স্কোর ছিল পুরো ১০০। 


এই পরিস্থিতিতে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল পেট্রোলিয়াম ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন। তারা জানিয়েছে, কলকাতায় পেট্রোলের দাম ১০০ ছুঁলে অন্ধকার হবে কলকাতা। আধঘণ্টা বন্ধ থাকবে সব পেট্রোল পাম্প।


ক্রমাগত জ্বালানির দাম বৃদ্ধির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে বিভিন্ন জেলায় রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান একাধিক রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থকরা।  উত্তর ২৪ পরগনার বেড়াচাঁপায় টাকি রোডে বিক্ষোভ দেখান বাম কর্মী-সমর্থকরা। 


পেট্রোলের দামবৃদ্ধির প্রতিবাদে হুগলির বৈদ্যবাটিতে পোস্টার নিয়ে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল। পেট্রোল পাম্পের উল্টোদিকে কাঠের উনুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ হয়। 


এদিকে, বিধি মেনে শর্তসাপেক্ষে সরকার বাস চালানোর অনুমতি দিলেও, ডিজেল নির্ভর বাস চালাতে নারাজ মালিকরা। জেলা থেকে কলকাতা - কার্যত হাতে গোনা বেসরকারি বাস চলছে। রাস্তায় বেরিয়ে হয়রানি বাড়ছে যাত্রীদের।


এক বছরে ডিজেলের দাম বেড়েছে লিটারে ১৭ টাকা। অথচ, ভাড়া বাড়েনি বাসের। মালিকদের দাবি, বিপুল পরিমাণ ঘাটতি নিয়ে বাস চালানো সম্ভব নয়। বাস মালিকদের সাফ কথা, খরচ তোলার জন্য ভাড়া বাড়ানো ছাড়া আর কোনও পথ খোলা নেই। অবিলম্বে ভাড়া বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। 


করোনা পরিস্থিতির জেরে আর্থিক বিপর্যয়ের মুখে দেশ। বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন। তার ওপর পেট্রোল-ডিজেলের এইভাবে দাম এক-দুদিন অন্তর বেড়ে চলায় নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী। 


পেট্রোল-ডিজেলের এইভাবে দাম বেড়ে চলায় প্রভাব পড়ছে বাজারে। জিনিসপত্রের আগুন দামে মাথায় হাত মধ্যবিত্তের। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব বিরোধীরা। 


তার ওপর রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের দামও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৃহস্পতিবারই সিলিন্ডার পিছু রান্নার গ্যাসের দাম বেড়েছে ২৫ টাকা! এর ফলে আশঙ্কিত মধ্যবিত্তরা। এই সাঁড়াশি চাপে সাধারণ মানুষের মাথায় হাত। 


কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়ামমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান সম্প্রতি বলেছেন, মানছি জ্বালানির দামবৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষের অসুবিধা হচ্ছে। কিন্তু একবছরে ৩৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে করোনার ভ্যাকসিনের জন্য। এই কঠিন পরিস্থিতিতে কল্যাণমূলক প্রকল্পের জন্য আমরা অর্থ সঞ্চয় করছি। 


অর্থনীতিবিদদের একাংশের যুক্তি, একটা স্তরে সরকারের উচিত দাম নিয়ন্ত্রণ করা। তাঁদের মতে, এটা জরুরি পণ্য। এর সঙ্গে বাজারের অন্য পণ্যের দামের ওঠানামা যুক্ত। এর দায় এড়াতে পারে না সরকার। একটা স্তরে দাম নিয়ন্ত্রমের করা উচিত।  জিএসটি আওতায় আনছে না। এটা আনলে ভাল হতো।