কলকাতা: তৃতীয় ঢেউ ভয়ঙ্কর না হলে পুজোর পরে স্কুল খুলবে। এমনটাই জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বললেন, ‘পরিস্থিতি ঠিক থাকলে পুজোর ছুটির পরেই খুলবে স্কুল।’
করোনা পরিস্থিতিতে ২০২০-র ১৪ই মার্চ বন্ধ হয়েছিল স্কুলে সশরীরে পঠনপাঠন। প্রায় দেড় বছর, শৈশব থেকে হারিয়ে গেছে স্কুল-জীবন।
এখন শুধুই ভার্চুয়াল ক্লাস। পঠনপাঠনে পুরোপুরি অনলাইন নির্ভরতা। টিফিন ভাগ করে খাওয়া নেই। ছুটির ঘণ্টা বাজলেই স্কুলের মাঠে হুড়োহুড়ি নেই।
এদিন নবান্নের সাংবাদিকবৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তৃতীয় ঢেউ ভয়ঙ্কর না হলে পুজোর পরে স্কুল খুলবে। মহারাষ্ট্র, কেরলের মতো কয়েক রাজ্যের পরিস্থিতি ভাল নয়। পরিস্থিতি ঠিক থাকলে পুজোর ছুটির পরেই খুলবে স্কুল।’
এর আগেও মুখ্যমন্ত্রী একবার বলেছিলেন, পুজোর পরে রাজ্যে খুলতে পারে স্কুল। একদিন অন্তর একদিন স্কুল খোলার ভাবনা রাজ্য সরকারের, জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেছিলেন, আফটার পুজো ভ্যাকেসন আমরা চেষ্টা করব, এভরি অল্টারনেটিভ ডে তে যদি স্কুলটা খোলা যায়। পুজোর ছুটির পর চেষ্টা করব, যাতে অলটারনেটিভ ডে-তে স্কুল যাতে খোলা যায়।
শিক্ষাবিদরাও এক সুরে বলছিলেন, স্কুল অবশ্যই খোলা উচিত। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুগত বসু বলেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী যথার্থ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পড়ুয়াদের ক্ষতি হচ্ছিল। প্রাইমারি স্কুল আগে খোলা উচিত। আমেরিকায় তো স্কুল খোলাই। সেপ্টেম্বর থেকে কলেজ, ইউনিভার্সিটি শুরু হবে। এখন মাস্ক পরা হবে কি হবে না দেখা হচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোভিড-বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য ক্যাথরিন ও’ব্রায়েনও জানিয়েছিলেন, স্কুলে পড়ার জন্য শিশুদের ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রয়োজন নেই। এই কারণের জন্য তাদের স্কুলের দরজা বন্ধ রাখা উচিত নয়।
যদিও, গতকাল নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বলেন, করোনা আবহে স্কুল খোলার আগে বিষয়টি নিয়ে আরও চিন্তাভাবনা করা দরকার। তিনি বলেন, স্কুল বন্ধ থাকলে যেমন পড়ুয়াদের ক্ষতি, তেমনি স্কুল খোলার ফলে অসুখ-বিসুখ বাড়লে তাও চিন্তার।
অন্যদিকে, স্কুল খোলার পাশাপাশি, উপ-নির্বাচন নির্ঘণ্ট ঘোষণার দাবিতে এদিন ফের জোরালো সওয়াল করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বললেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে, দ্রুত উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা করুক কমিশন।’
আফগানিস্তানে আটক ভারতীয়দের ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আফগানিস্তানে আটকদের ফেরাতে কেন্দ্র-রাজ্য একসঙ্গে কাজ করছে। ২৬ অগাস্ট কেন্দ্রের ডাকে সর্বদলীয় বৈঠকে যাবে তৃণমূল।’
পাশাপাশি, ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের স্পনসর-জট নিয়েও মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী। বললেন, ‘ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে এতদিন ধরে ঝুলিয়ে বলছে চালাতে পারব না।’ মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, ’পারব না, ছেড়ে চলে যাচ্ছি, কেন বলছে লগ্নিকারী সংস্থা? লগ্নিকারী সংস্থার এই কথার পিছনে কী রহস্য?’