কলকাতা : "উনি রাজনীতিতে সবার অভিভাবক ছিলেন। মজা করে ওঁকে বলতাম দ্য গ্র্যান্ড ফাদার অফ বেঙ্গল পলিটিক্স।" আজ শেষ শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে এভাবেই সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের প্রশংসা করলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)।
প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায় (Subrata Mukherjee)। শোকস্তব্ধ বাংলার রাজনৈতিক মহল। একে একে তাঁকে শেষশ্রদ্ধা জানান একাধিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। সেই তালিকায় ছিলেন দিলীপ ঘোষও। তিনি বলেন, "আমি গত ৫ বছর ওঁর কাছে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছি। বিধায়ক হওয়ার পরে ওঁর সঙ্গে কথা বলেছি, হাসিঠাট্টা করেছি। উনি রাজনীতিতে সবার অভিভাবক ছিলেন। মজা করে ওঁকে বলতাম দ্য গ্র্যান্ড ফাদার অফ বেঙ্গল পলিটিক্স। সিনিয়র শোভন-দা আছেন। কিন্তু ওঁর একটা আলাদা জায়গায় ছিল। মেয়র থেকে মন্ত্রী- সব জায়গায় তাঁর যোগ্যতার পরিচয় রেখেছেন। বাংলার রাজনীতিতে এত বড় মহীরূহের পতন হল। যাঁরা রাজনীতিক আছেন তাঁদের দায়িত্ব সেই জায়গাটাকে পূরণ করা। ওঁর চলে যাওয়ায় বাংলার রাজনীতিতে অনেক বড় শূন্যস্থান তৈরি হল।"
আলোর উত্সবের রাতেই বাংলার রাজনীতিতে নেমে এলেছে অন্ধকার। গতকাল রাত ৯টা ২২-এ এসএসকেএম হাসপাতালে মৃত্যু হয় সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের। রাতে পার্ক সার্কাসের পিস ওয়াল্ডে রাখা হয় সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মৃতদেহ। আজ সকাল ১০টা নাগাদ সেখান থেকে দেহ নিয়ে যাওয়া হয় রবীন্দ্র সদনে। সকাল ১০টা থেকে চার ঘণ্টা রবীন্দ্রসদনে শায়িত রাখার পর প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় বিধানসভা ভবনে। সকাল থেকে প্রয়াত পঞ্চায়েতমন্ত্রীকে দেখতে উপচে পড়ে ভিড়। ভিড়ে সামিল ছিলেন রাজনীতিক থেকে সাধারণ মানুষ। ঘুরে যান সুব্রত ভট্টাচার্যর মতো প্রাক্তন ক্রীড়াবিদরা। এসেছিলেন সুব্রতর সঙ্গে অভিনয় করা চিত্রতারকা মুনমুন সেনও। শ্রদ্ধা জানিয়ে যান রাজ চক্রবর্তী, জুন মালিয়া, সায়ন্তিকারাও। এরপর বিধানসভায় রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রীকে শেষশ্রদ্ধা জানান রাজ্যপাল, বিধানসভার অধ্যক্ষ, শাসক ও বিরোধী দলের নেতারা। তারপর সেখান থেকে দেহ নিয়ে যাওয়া হয় বালিগঞ্জের বাড়িতে। কেওড়াতলা শ্মশানে হবে শেষকৃত্য।
রবীন্দ্র সদনে প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, সুব্রত মুখোপাধ্যায় ছিলেন রাজনীতির বর্ণময় চরিত্র। রসবোধ সম্পন্ন নেতা ছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। একই সুরে সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, "বিধানসভার বাইরে ও ভিতরে বহুবার কথা হয়েছে। ওঁর অভিজ্ঞতা এক মূল্যবান বিষয়।"