উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: ঝড়-জল-বৃষ্টি। অথবা নির্বাচনী কাজ নিয়ে ব্যস্ততা। যাই থাকুক না কেন, এই একডালিয়া এভারগ্রিন (Ekdalia Evergreen) ক্লাবে রাত আটটা-সাড়ে আটটার পর একবার আসা চাই। এটাই ছিল তাঁর অক্সিজেন নেওয়ার জায়গা। নিজে এই কথাটা বলতেন। ২৪ তারিখে সুব্রত মুখোপাধ্যায় (Subrata Mukherjee) ভর্তি হন হাসপাতালে। তার আগের দিনও রাত দশটা পর্যন্ত এই ক্লাবে ছিলেন। প্রিয় সুব্রতদার প্রয়াণে মন ভাল নেই একডালিয়া এভারগ্রিনের।
আর ক্লাবে আসবেন না। তাঁর চেয়ারটায় ছবি আর স্মৃতিচারণায়। এত ব্যস্ততার মধ্যেও ক্লাবের ছেলেমেয়েদের সময় দিতেন। এক ক্লাবকর্মী কথায়, “দাদা বলেছিলেন লক্ষ্মীপুজোর (Lakshmi Puja) পর রেগুলার চেক আপে যাব। ২৪ তারিখ ভর্তি হওয়ার কথা ছিল। তেইশ তারিখ রাত নটা-সাড়ে নটায় আসেন। যত ক্লান্ত থাকুন না, আধ ঘণ্টা থাকবেন। ক্লাবে ভোগ খেতেন। মিষ্টি পছন্দ করত। আমপ্রেমী। আম তিনটে-চারটে খেত কোনওদিন। সব ভাগ করে নিতেন। মন্ত্রী নন, দাদার মতো ভাবতাম।’’
বাংলার রাজনীতিতে (West Bengal Politics) মহীরুহ পতন। সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের (Ekdalia Evergreen) প্রয়াণে শোকস্তব্ধ বাংলা। আজ রাজ্য সরকারি দফতরে অর্ধনমিত জাতীয় পতাকা। গতকাল রাত ৯টা ২২-এ এসএসকেএম হাসপাতালে মৃত্যু হয় সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের। রাতে পার্ক সার্কাসের (Park Circus) পিস ওয়াল্ডে রাখা হয় সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মৃতদেহ। আজ সকালেই দেহ নিয়ে যাওয়া হয় রবীন্দ্র সদনে। দুপুর ২টো, রবীন্দ্রসদনে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য রাখা থাকবে মরদেহ। দুপুর ২টোয় রবীন্দ্রসদন থেকে গন্তব্য বিধানসভা। প্রয়াত নেতার মৃতদেহ বিধানসভা থেকে নিয়ে যাওয়া হবে বালিগঞ্জের বাড়িতে। এরপর কেওড়াতলা শ্মশানে হবে শেষকৃত্য।
পূর্ব বর্ধমানের (East Burdwan) নাদনঘাটের (Nadanghat) ন’পাড়ার একটি স্কুলে পড়াতেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের (Subrata Mukherjee) বাবা অশোকনাথ মুখোপাধ্যায়। ওই স্কুলে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছিলেন প্রয়াত মন্ত্রী। নাদনঘাটের যে বাড়িতে সেই সময় থাকতেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের পরিবার, আজ সেখানে গিয়ে শ্রদ্ধা (Homage) জানান ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ (Swapan Debnath)। স্কুলের সহপাঠীদের (Classmates) অনেকে সেখানে প্রয়াত পঞ্চায়েতমন্ত্রীর ছবিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।