সন্দীপ সরকার, কলকাতা: রাজ্যে ভ্যাকসিন অপ্রতুল। এখনও আবিষ্কার হয়নি করোনার সঠিক ওষুধ। এই পরিস্থিতিতে, যে ওষুধ দিয়ে মারণ ভাইরাসকে প্রতিরোধ করার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা, সেরকম প্রায় ৩ কোটি টাকার ওষুধ ও ইঞ্জেকশন নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছে, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।  কারণ খুব শীঘ্রই ওষুধগুলির মেয়াদ ফুরিয়ে যাবে। 


হাসপাতাল সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত, মাত্র ৩৫ জন করোনা আক্রান্তের চিকিৎসা চলছে সেখানে।  ফলে সব ওষুধ কাজে লাগছে না। হাসপাতাল সূত্রে দাবি, স্বাস্থ্য দফতর থেকে যে ওষুধ পাঠানো হয়েছিল, তার মধ্যে এখনও ব্যবহার হয়নি - রেমডেসিভির, টসিলিজুমাবের মতো গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ। 


কোন ওষুধ কত পরিমাণ অব্যবহৃত তার একটা ছোট্ট তালিকা দেখে নেওয়া যাক--


পড়ে রয়েছে রেমডেসিভির-এর ২৩৭৪টি ভায়াল। যার দাম ৯০ লক্ষ ২১ হাজার টাকা। 


পড়ে রয়েছে টসিলিজুমাব-এর ১৬৮টি ভায়াল। দাম ৩৬ লক্ষ ৫২ হাজার টাকা। 


ব্যবহার হয়নি কাসিরিভিমাব-এর ১৪৯টি ভায়াল। যার দাম ৮৭ লক্ষ ৯১ হাজার টাকা।


কাজে লাগেনি মিথাইল প্রেডনিসোলোন-এর ১৪ হাজার ভায়াল। যার মূল্য ৪২ লক্ষ টাকা। 


অব্যবহৃত সাড়ে ৭৫ হাজার ৫৩০টি হাইড্রক্সি ক্লোরোকুইনের ট্যবলেট। দাম সাড়ে ৩ লক্ষ ৭৭ হাজার ৬৫০ টাকা।


পড়ে রয়েছে ওষুধ অ্যাম্ফোটেরিসিন বি-এর ১০৩টি ভায়াল। যার দাম ২ লক্ষ ৬ হাজার টাকা।


কাজে লাগেনি ১ লক্ষ ৮৬ হাজার ২০০ জিঙ্ক সালফেট ট্যাবলেট। যার দাম ৯ লক্ষ ৩১ হাজার টাকা। 


এরকমভাবেই আরও বেশ কিছু জীবনদায়ী ওষুধ ও ইঞ্জেকশন ব্যবহার হয়নি। 


কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, অব্যবহৃত ওষুধগুলি অন্য হাসপাতালে পাঠানোর জন্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। কিন্তু এক মাস পেরিয়ে গেলেও কোনও উত্তর মেলেনি। 


এর আগে, গত জুন মাসে, কোটি টাকার কোভিড-প্রতিরোধক ওষুধ নষ্টের আশঙ্কা রয়েছে জানিয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে চিঠি দিয়েছিল বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল। 


চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, প্রায় ১৩ ধরনের রোগের ৫০ হাজার ওষুধ বেলেঘাটা আইডি-তে পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। মেয়াদ ফুরোনোর আগে মজুত ওষুধ অন্য হাসপাতালে কাজে লাগানোর জন্য আবেদন জানানো হয়েছে ওই চিঠিতে।