ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: করোনা থেকে সেরে উঠছেন অনেকেই। কিন্তু সঠিকভাবে সেরে উঠছেন না অনেকেই। কেউ অন্য রোগে ভুগছেন। কেউ আবার সেরে উঠেও অন্য রোগে মারা গিয়েছেন। কেউ আবার দীর্ঘ রোগভোগে কাজ হারিয়েছেন। মারণ ভাইরাসের দুই তরঙ্গ সমাজে কতটা ক্ষত তৈরি করেছে? তা জানতে এবার সমীক্ষা শুরু হল পশ্চিমবঙ্গে।


করোনা ভয়াবহ হয়ে উঠেছে রূপ বদলে। এক এক রূপে আসে, চলে যায়, কিন্তু রেখে যাচ্ছে নিজের ভয়ঙ্কর ছাপ! করোনা জয় করে হাসপাতাল থেকে হাসিমুখে বাড়ি ফিরেও মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন অনেকে।অনেকে করোনা থেকে সেরে উঠে নানা রকম অসুখে ভুগছেন। করোনা পরবর্তী দীর্ঘ রোগভোগের কারণে কাজ হারিয়েছেন বহু মানুষ। 


মারণ ভাইরাসের দুই তরঙ্গে সমাজে কতটা প্রভাব পড়ল, সেইসব তথ্য একত্রিত করে এবার সমীক্ষা শুরু হল এ রাজ্যে। কোভিড পরবর্তী পরিস্থিতিতে কী হচ্ছে, কোভিড থেকে সেরে উঠে কতজন অন্য রোগে অসুস্থ হলেও, কতজন মারা গেলেন, এই নিয়ে গবেষণা শুরু হয়েছে। বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল এবং ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব কেমিক্যাল বায়োলজির গবেষকদের যৌথ উদ্যোগে শুরু হচ্ছে পোস্ট কোভিড ফলোআপ সার্ভে। 


সমীক্ষার দায়িত্বে রয়েছেন বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের ৩ চিকিৎসক। আইআইসিবি-র তরফে রয়েছেন দীপ্যমান গঙ্গোপাধ্যায়। বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের অধ্যক্ষ, অনিমা হালদার বলেন, "করোনা সেরে গেলেও দুর্বলতা থাকছে। বুক, স্নায়ু, পেটের রোগ সহ বিবিধ অসুখে দীর্ঘ দিন ধরে অনেকেই ভুগছেন। প্রভাব কতটা, কোভিড পরবর্তী সময়ে ঠিক কী ধরণের সমস্যা বেশি হচ্ছে সেটা বুঝতেই এই বিশ্লেষণ।"


চিকিৎসক এবং গবেষক সূত্রে খবর, করোনা মুক্ত হওয়ার পর ক্লিনিকে চিকিৎসার জন্য আসেন মাত্র ৪০ শতাংশ মানুষ। সমীক্ষার স্বার্থে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন এমন এক হাজার জনকে ফোন করে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গুগুল ফর্ম পূরণ করা ৬০০ জনের তথ্য নিয়েই কাজ শুরু হয়েছে। 


বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের ভাইস প্রিন্সিপাল, আশিস মান্না বলেন,  "এখানে যাঁরা ভর্তি হয়েছিলেন তাঁদের অনেকের শারীরিক অসুস্থতা ছিল। কেউ মারা গিয়েছেন। অনেকে চাকরি হারিয়েছেন। চিকিৎসকরা বলছেন, তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা যখন ঘনীভূত হচ্ছে, তার আগে এই সমীক্ষা স্বাস্থ্যক্ষেত্রের প্রস্তুতিতে অনেক কাজে আসবে।" সূত্রের খবর, এক মাস পর প্রকাশিত হতে পারে, সমীক্ষার প্রথম পর্বের রিপোর্ট।