কলকাতা: দেশের সর্বকনিষ্ঠ স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসাবে হাসিমুখে ফাঁসিতে চড়েছিলেন ক্ষুদিরাম বসু। ১৯০৮ সালের ১১ অগাস্ট মুজফফরপুর ষড়যন্ত্র মামলায় ফাঁসি হয় এই মহান বিপ্লবীর। আজ ভারতের এই বীর সন্তানের মৃত্যুবার্ষকী। 


১৮৮৯ সালের ৩ ডিসেম্বর মেদিনীপুর শহরের কাছাকাছি (বর্তমানে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা) কেশপুর থানার অন্তর্গত মৌবনী (হাবিবপুর) গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ক্ষুদিরাম বসু। 


অল্প বয়সেই তিনি কলকাতার বারিন্দ্র কুমার ঘোষের মতো বিপ্লবীদের সংস্পর্শে আসেন এবং মাত্র ১৫ বছর বয়সে নিজেকে স্বাধীনতা সংগ্রামে ব্রতী করেছিলেন ক্ষুদিরাম। 


স্থানীয়দের মধ্যে ব্রিটিশবিরোধী পুস্তিকা বিতরণের জন্য ইংরেজ শাসকরা তাঁকে আটক করে। ক্ষুদিরামের বয়স যখন ১৬ বছর, তিনি ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে এবং থানার কাছে বোমা ছুড়েছিলেন।


১৯০৮ সালের এপ্রিল মাসে, প্রধান প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট ডগলাস কিংসফোর্ডকে হত্যার উদ্দেশ্যে ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকি মুজফফরপুরে একটি গাড়িতে বোমা নিক্ষেপ করেছিলেন। কিন্তু, ডগলাস ছিলেন না। গাড়িতে থাকা দুই মহিলা মিসেস কেনেডি ও তাঁর কন্যা মারা গিয়েছিলেন। 


পুলিশ তাঁকে ধরার আগেই প্রফুল্ল চাকি নিজেকে গুলি করে আত্মহত্যা করেন। ক্ষুদিরাম বসুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ব্রিটিশ বিচারকের প্রাণনাশের চেষ্টার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন ক্ষুদিরাম। তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।


বিখ্যাত অনুশীলন সমিতির সদস্য ছিলেন ক্ষুদিরাম। মাত্র ১৮ বছর বয়সে ফাঁসির মঞ্চে হাসতে হাসতে মৃত্যুবরণ করেছিলেন ক্ষুদিরাম। 


ক্ষুদিরাম বসুকে ফাঁসি দেওয়া হয় মুজফফপুর সংশোধনাগারে। বর্তমানে সেই কারাগারের নাম বদলে বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর নামেই নামকরণ করা হয়েছে।


ভারতের সর্বকনিষ্ঠ স্বাধীনতা সংগ্রামীদের একজন যিনি দেশের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তাঁর শরীরের মৃত্যু হলেও অমর হয়ে থেকে গেলেন প্রতিটি ভারতবাসীর মনের মণিকোঠায়।


এদিন ক্ষুদিরাম বসুর মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর পোস্টে ক্ষুদিরামের ছবিতে লেখা রয়েছে ‘প্রয়াণ দিবসে সশ্রদ্ধ প্রমাণ’। সেই সঙ্গে রয়েছে সেই অমর গান যা ক্ষুদিরামের আত্মবলিদানের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িয়ে গিয়েছে বাঙালি মননের সঙ্গে- ‘একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি হাসি হাসি পরব ফাঁসি দেখবে ভারতবাসী’।