কলকাতা: রাজ্যের বাজেট বরাদ্দ বেড়েছে ৮ গুণ। রাজস্ব আদায় ৩.৭৬ গুণ বেড়েছে। বাজেট (West Bengal Budget 2022-2023) পেশ করতে গিয়ে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তিনি বলেন, ‘‘৯০ হাজার কোটি টাকার বেশি কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে পাই। জিএসটি নিয়ে যাচ্ছে, সেই ভাগ পুরো দিচ্ছে না। রাজ্য থেকে টাকা তুলে নেয়, টাকা দেয় না। তাতে বড় বড় নাম দেয়, কেন্দ্রীয় সরকারের নামে, চিঠি পাঠায়।’’
মমতা জানিয়েছেন, কোভিড অতিমারি, একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ সত্ত্বেও বাজেট বরাদ্দ বাড়িয়েছে তাঁর সরকার। একই সঙ্গে কেন্দ্র এখনও দুর্যোগ বাবদ প্রাপ্য মেটায়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি। জানান, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের সময়কার ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা, আমফানের সময়কার ৩২ হাজার ৩১০ কোটি টাকা এবং ইয়াসের জন্য কেন্দ্রের কাছ থেকে এখনও ৪ হাজার ২২২ কোটি টাকা পায় রাজ্য।
কেন্দ্র সব টাকা আটকে রেখেছে বলেও অভিযোগ করেন মমতা। বলেন, ‘‘ডিভিসি ড্রেজিং করেনি, গঙ্গা-হলদিয়া ড্রেজিং করেনি। ফরাক্কায় টাকা দেয়নি। সব গঙ্গায় চলে যাচ্ছে। কেন্দ্র কিছু কাজ করেনি। ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান পড়ে রয়েছে। একটা টাকাও দিচ্ছে না। কোনও কাজই করছে না। মানুষ ব্যাঙ্কে টাকা রাখছেন। কিন্তু সেই টাকা আদৌ ফেরত পাবেন কি না, জানা নেই।’’
আরও পড়ুন: West Bengal News Live: 'লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে বরাদ্দ ১০ হাজার কোটি টাকা’, রাজ্য বাজেটে ঘোষণা মমতার
মমতা আরও বলেন, ‘‘একমাত্র বাংলা পেনশন দেয়। বিজেপির নেতাদের জানতে হবে। সোফায় বসে জ্ঞান দেয়। বিজেপির কোনও রাজ্য পেনশন দেয় না। চোরের মায়ের বড়বড় কথা।’’ কেন্দ্রের প্রকল্পের নাম পাল্টে মমতা নিজের বলে চালাচ্ছেন, এমন অভিযোগে সরব হয়েছেন রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁদেরকেও একহাত নেন মমতা। বলেন, ‘‘একমাত্র বাংলা পেনশন দেয়। বিজেপির নেতাদের জানতে হবে। সোফায় বসে জ্ঞান দেয়। বিজেপি-র কোনও রাজ্য পেনশন দেয় না। চোরের মায়ের বড়বড় কথা।’’ মমতা আরও বলেন, ‘‘আবার বলছে, গ্যাস-পেট্রোলের দাম বাড়বে। ইকোনমি ফেল করেছে। মানুষের হাতে পয়সা নেই। আমরা মানুষের হাতে পয়সা পৌঁছে দিচ্ছি।’’
বাজেট খাতে বরাদ্দ ঘোষণা করতে গিয়ে মমতা এ দিন জানান, এ বার রাজ্যের বাজেট বরাদ্দ ৮ গুণ বেড়েছে। রাজস্ব আদায় বেড়েছে ৩.৭৬ গুণ। সামাজিক পরিষেবা ক্ষেত্রে ১০.৭ গুণ বরাদ্দ বাড়িয়ে ৭৩ হাজার ৪৪১ কোটি টাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কৃষি পরিকাঠামোতে বরাদ্দ বেড়েছে ১১.৩ গুণ। সেখানে ৩৪ হাজার ১৩০ কোটি টাকার প্রস্তাব দেন মুখ্যমন্ত্রী। এ ছাড়াও ফিজিক্যাল ইনফ্রাস্ট্রাকচারে ৬ গুণ বরাদ্দ হয়েছে বলে জানান তিনি। সেখানে ১০ হাজার ৪২২ কোটি টাকার প্রস্তাব দেন। মমতা জানিয়েছেন, গোটা বাংলা জুড়ে তাজপুর, দেউচাপাঁচামি, অশোকনগরও এনজিসি প্রকল্প মিলিয়ে রাজ্যে কয়েক কোটির কর্মসংস্থান তৈরি করা হবে।
এ ছাড়াও বাজেটে বরাদ্দের যে প্রস্তাব দিয়েছেন মমতা, তা হল—
• নারী ও শিশুকল্যাণ ১৭ দশমিক ৫ গুণ বেড়েছে বরাদ্দ
• পিছিয়ে পড়া, আদিবাসী অনগ্রসর উন্নয়ে ৬ দশমিক ৭ গুণ বেড়েছে বরাদ্দ
• লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে ১ কোটি মানুষ সুবিধা পাচ্ছেন, বরাদ্দ ১০ হাজার কোটি টাকা
• খাদ্যসাথী প্রকল্পে ১০ কোটি মানুষ সুবিধা পাচ্ছেন
• শিক্ষাশ্রী প্রকল্পে ১ কোটি সাড়ে ৪ লক্ষ স্কলারশিপ
• ১ লক্ষ ৫৭ হাজারের বেশি জাতি শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে
• কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন ৭৭ লক্ষ
• রূপশ্রী প্রকল্পে ১০ হাজার টাকা পেয়েছেন ১১ লক্ষের বেশি
• ফ্ল্যাট-বাড়ি কেনাবেচায় স্ট্যাম্প ডিউটিতে ২ শতাংশ ছাড়
• ছাড়ের মেয়াদ বাড়ল ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত
• সার্কেল রেটেও ১০ শতাংশ ছাড়
• সিএনজি চালিত যানবাহনের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন ফি ও রোড ট্যাক্স মকুব
• ২ বছরের জন্য রেজিস্ট্রেশন ফি ও রোড ট্যাক্স মকুব