সঞ্চয়ন মিত্র ও অরিত্রিক ভট্টাচার্য,  কলকাতা:  ক্যালেন্ডারে বাকি আর মাত্র ৫০ দিন। গত বছরের মতো এ বছরেও করোনার রক্তচক্ষুর মাঝেই এ বছর দুর্গাপুজো উৎসব পালনে মাততে চলেছে শহর।  তবে মহামারী পরিস্থিতিতে কীভাবে হবে শারদ-উদযাপন। সে বিষয়ে বেশ কিছু নির্দেশিকা দিয়েছে ফোরাম ফর দুর্গোত্‍সব। 


ইতিমধ্যেই বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসবে প্রস্তুতির সলতে পাকানো শুরু হয়ে গিয়েছে। বিগত বছর প্রশাসনিকভাবে যেসব বিধি-নিষেধ আরোপিত হয়েছিল সেগুলোকে সামনে রেখেই প্রস্তুতি শুরু করেছে পুজো কমিটিগুলো। এ ব্যাপারে ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের তরফেও কমিটিগুলোকে ইতিমধ্যেই বেশকিছু নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। তবে পুজোর সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত মানুষদের টিকাকরণের ওপর সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে।


ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের সাধারণ সম্পাদক শাশ্বত বসু বলেন, "পুজো সংগঠকদের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে যথাসম্ভব খোলামেলা মণ্ডপ করতে হবে। যাতে বাইরে থেকে ঠাকুর দেখা যায়।" 


আর কী কী বলা হয়েছে এ বছরের নির্দেশিকায়?


রাতের ভিড় নয়, সারাদিন ধরে যাতে মানুষকে ঠাকুর দেখতে উৎসাহিত করা যায়, সে ব্যবস্থা করতে হবে। বিসর্জনের শোভাযাত্রায় যথাসম্ভব কম লোক নিয়ে যেতে হবে।  প্যান্ডেলের প্রবেশপথ ব্যারিকেড দিয়ে যথাসম্ভব দীর্ঘ করতে হবে, যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকে। দর্শকদের মাস্ক এবং স্যানিটাইজার ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। ঠাকুরের ভোগে কাটা ফল দেওয়া যাবে না। পুষ্পাঞ্জলি ও সন্ধিপুজোর মতো অনুষ্ঠানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে ভিড় নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।


কলকাতার দুর্গাপুজো আজ আন্তর্জাতিক উৎসবে পরিণত হয়েছে। কিন্তু করোনার দাপটও যেহেতু আছে এবং সঙ্গে রয়েছে তৃতীয় ঢেউয়ের ইঙ্গিত। এই করোনা আবহে সাবধানবাণী শোনা গেল কলকাতা পুরসভার বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্সের চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিমের গলায়। তিনি বলেন, "অতিরিক্ত জৌলুস যাতে এবছর বিদেশিদের আকৃষ্ট না করে, সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।"


প্রসঙ্গত, কোভিড মহামারীর ফলে, আজ বহু জিনিসেরই ভার্চুয়াল স্বাদ নিতে হচ্ছে। গতবছর, দর্শক শূন্য মণ্ডপ বহু পুজোকেই অনলাইনের দিকে আকৃষ্ট করেছিল। পুজো দেখানো থেকে অঞ্জলি... অনলাইনের মাধ্যমে গোটা বিশ্বের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে কলকাতার দুর্গাপুজোকে। তবে  প্রস্তুতি চলছে  জোরকদমে। সমস্ত বিধিনিষেধ মেনে কোভিডকে জয় করেই উৎসবে মাততে চাইছে গোটা বাংলা।