কলকাতা : দেবের 'সৌজন্য' পলিসির বিরোধিতা করে তৃণমূলের মধ্যে একমাত্র কুণাল ঘোষই সমালোচনা করেছিলেন কড়া কথায়।  কিন্তু দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন দেবের পাশেই। আর যেই কুণাল ঘোষ 'সৌজন্য'র রাজনীতি দেখাতে গেলেন তাপস রায়ের সঙ্গে , তিনি পেলেন ডানা-ছাঁটার চিঠি ! রাজ্য সম্পাদক পদ খোয়ালেন কুণাল। অথচ  দলনেত্রীর শব্দপ্রয়োগের সমালোচনা করা সত্ত্বেও দেবের বিরুদ্ধে একটিও কথা বলল না দল। এই নিয়ে ফের একবার সরব হলেন কুণাল ঘোষ, এবিপি আনন্দর 'ঘণ্টাখানেক সঙ্গে সুমন' অনুষ্ঠানে। 


কুণাল বললেন, ব্যক্তিগত স্তরে কারও কারও সঙ্গে ভাল সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও দলীয় মুখপাত্র হিসেবে বরাবর বিরোধীদের বিরুদ্ধে কড়া কথায় সরব হয়েছেন ।  যথনই কেউ দলের নেত্রী বা সেনাপতির  সমালোচনা করেছে, ফুঁসে উঠেছেন কুণাল। তাঁর কথায়, এমনভাবে কড়া কথায় আক্রমণ করেননি আর কেউই। অথচ আজ তিনি পদহীন। আর সেখানেই কুণালের প্রশ্ন,  দেব যখন লোকসভা ভোটের আগে এবিপি আনন্দে এসে বললেন, মিঠুন চক্রবর্তী আমার বাবার মতো, গদ্দারি শব্দ পছন্দ নয়, তখন দল তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি। অথচ কুণাল ঘোষ রক্তদান শিবিরে তাপস রায়ের সঙ্গে একই মঞ্চে আসার পরই পেলেন দলের চিঠি। খোয়া গেল তাঁর পদ।  


ঘণ্টাখানেক সঙ্গে সুমন' অনুষ্ঠানে এসে কুণালের প্রশ্ন, কেন এই নিয়মের ফারাক ? ওরা সেলিব্রিটা আর কুণাল ঘোষ দেখতে ভাল নয় বলে? কুণালের মন্তব্য,দল তো অন্তত দেবকে বলতে পারত, তুমি এগুলো বোলো না। তাঁর প্রশ্ন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন যেখানে আছে মানুষের ঘরে ঘরে, সেখানে তৃণমূলের বারবার করে সিনেমা আর্টিস্ট দরকার পড়ছে কেন?  তাঁর দাবি, এতে করে তৃণমূল স্তরের কর্মীরা দ্বিধায় পড়ে যাচ্ছেন।  


কুণাল ঘোষ আরও বলেন, তাণর সঙ্গে দেবের সম্পর্ক খারাপ নয়। আর মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে তো ভীষণ ভাল সম্পর্ক ছিল। অথচ তৃণমূলের মুখপাত্র হিসেবে তিনি আক্রমণে ঝাঁঝরা করে দিয়েছেন মিঠুন চক্রবর্তীকে। পাল্টা মিঠুনও তাই করেন। কারণ, মমতা ও অভিষেককে লাগাতার আক্রমণ করেন মিঠুন। পার্টির স্বার্থে তাই মিঠুনকে আক্রমণ করতে দ্বিধা করেননি কুণাল ঘোষ। 


এদিনই এই বিষয়ে কথা বলে থামেননি কুণাল ঘোষ । বৃহস্পতিবারও এই বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। কেন দল তাঁকে পদ থেকে সরাল , এই প্রশ্ন করতেই কুণাল বলেন, 'তাঁদের মনে হয়েছে যে, আমার যে আক্রমণ, আমার যে বিরোধীদের আক্রমণ, আমি যে ভাবে চাঁছাছোলা ভাষায় কথা বলি, দলকে ডিফেন্ড করি বা দলের হয়ে আক্রমণ চালাই, সেগুলোর প্রয়োজন নেই। তাঁরা বারবার আমাকে অগ্নিপরীক্ষা দিতে বাধ্য করছেন। তাঁরা পুরো আস্থা রাখেননি, না হলে এই ধরনের কোনও প্রেস রিলিজ হয় কী করে? তো সুতরাং এই জায়গাটায় আমি খুব নিশ্চিত যে, তাঁরা মনে করছেন এই পারফরম্যান্স যদি কোনও কর্মী দেখায়, তাঁদের ওপর যখন-তখন দমন-পীড়ন করা যায়, কিন্তু, কোনও ধার করা সেলিব্রিটি এলে, তাঁদের ক্ষেত্রে পার্টির অসুবিধা হয়। রাজনৈতিক কর্মী যাঁরা, তাঁদের ক্ষেত্রে শৃঙ্খলাটা শৃঙ্খলও হয়ে যেতে পারে, কিন্তু বাকিদের ক্ষেত্রে সেগুলোর কোনও প্রশ্ন নেই। '