লেহ্: পূর্ণ রাজ্য়ের স্বীকৃতির জন্য লাগাতার লড়াই চলছে। একটানা অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন সোনম ওয়াংচুক। সেই আবহেই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি লাদাখে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন হিংসাত্মক আকার ধারণ করল সেখানে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধল আন্দোলনকারীদের। এই মুহূর্তে আগুন জ্বলছে লেহ্ শহরে। পুলিশের গাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইঁটবৃষ্টির খবরও সামনে আসছে।
২০১৯ সালের অগাস্ট মাসে জম্মু ও কাশ্মীরের জন্য সংরক্ষিত অনুচ্ছেদ ৩৭০ প্রত্যাহার করে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার। উপত্যকাকে ভেঙে দুই পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীর এবং লেহ্-র জন্ম হয়। এই ব্যবস্থা সাময়িক, জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখকে রাজ্যের স্বীকৃতি ফিরিয়ে দেওয়া হবে বলে সেই সময় জানানো হলেও, এত বছরেও জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ রাজ্যের স্বীকৃতি ফিরে পায়নি।
লাদাখকে রাজ্যের স্বীকৃতি দিতে, ষষ্ঠ তফসিলের অন্তর্ভুক্ত করতে কেন এই ঢিলেমি, সেই নিয়ে লাগাতার সরব জলবায়ু কর্মী সোনম ওয়াংচুক। গত ১৫ দিন ধরে একটানা অনশন করছেন তিনি। সেই আবহেই মঙ্গলবার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সোনমের সঙ্গে অনশনে শামিল হওয়া দু'জনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় গত কাল। আর তাতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন সকলে। বুধবার দিনভর বনধ ডাকা হয় Leh Apex Body-র তরফে।
সেই আবহেই বুধবার সকালে শত শত মানুষ লেহ্-র রাস্তায় নেমে আসেন। রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে স্লোগান তোলেন তাঁরা। লেহ্-তে বিজেপি-র দলীয় কার্যালয়ের বাইরে গিয়ে পৌঁছয় সেই মিছিল। কেন লাদাখের মানুষের দাবিদাওয়া কানে তুলছে না কেন্দ্র, সেই নিয়ো বিক্ষোভ দেখানো হয়। পুলিশের তরফে বিজেপি-র দলীয় কার্যালয়ের বাইরে থেকে বিক্ষোভকারীদের হটানোর চেষ্টা করা হলেই, পরিস্থিতি তেতে ওঠে।
জানা গিয়েছে. বিক্ষোভকারীদের হঠাতে কাঁদানে গ্য়াসের শেল ফাটায় পুলিশ। ব্যাপক ধস্তাধস্তিও হয় দুই পক্ষের মধ্য়ে। এতে পুলিশকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি ইঁটবৃষ্টি শুরু হয়। রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। সাম্প্রতিক কালে এই প্রথম লাদাখের পরিস্থিতি এতটা তেতে উঠল, যা উদ্বেগ বাড়িয়েছে দিল্লির।
লাদাখের মানুষের দাবিদাওয়া সম্প্রতি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি ঘটনের ঘোষণা করে অমিত শাহের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। বলা হয়, Leh Apex Body এবং Kargil Democratic Alliance-এর প্রতিনিধি, সামাজিক-রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় সংগঠনগুলির সঙ্গে বৈঠক হবে। ৬ অক্টোবরের দিনটিকেও বেছে নেওয়া হয় বৈঠকের জন্য। কিন্তু সংবাদমাধ্যমে লাদাখের প্রতিনিধিরা বিস্ফোরক দাবি করেন। তাঁরা জানান, লাদাখকে পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করা ভুল ছিল বলে জানিয়েছেন শাহ। তাঁদের দাবিদাওয়াও খারিজ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। সেই থেকেই আন্দোলন অন্য মাত্রা পায়, যা আজ এত চরমে পৌঁছল।