সঞ্চয়ন মিত্র, কলকাতা: কালীঘাটে কালী পুজোর রাতে কী পুজো হয়? এ প্রশ্ন শুনে মনে হতেই পারে প্রশ্নকর্তার মতিভ্রম হয়েছে। কালী মন্দির যখন, তখন স্বাভাবিকভাবেই কালীপুজোর রাতে কালীপুজো হওয়া উচিত। কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথি যা কিনা দীপান্বিতা অমাবস্যা বলে পরিচিত, সেদিন সমস্ত শক্তিপীঠে কালী বা শক্তির আরাধনা হলেও কালীঘাট এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম।



ওই দিন সন্ধ্যায় কালীঘাটে লক্ষ্মী পুজো করা হয়। গর্ভগৃহে বিরাজমান দক্ষিণাকালী সেদিন মহালক্ষী রূপে পূজিতা হন। আধুনিক কালীঘাট মন্দির তৈরি করেন সাবর্ণ রায়চৌধুরীর পরিবার। পরবর্তীকালে তাঁদের জ্ঞাতি গঙ্গাপ্রসাদ চক্রবর্তীকে মন্দির পরিচালনার দায়িত্ব দেন। এই গঙ্গাপ্রসাদ ছিলেন পরম বৈষ্ণব। মনে করা হয় গঙ্গাপ্রসাদের আমল থেকেই কালীপুজোর রাতে মহালক্ষ্মী বা ধনলক্ষ্মীর পুজো প্রচলিত হয়েছে।

ওইদিন সকালে আর পাঁচটা দিনের মত দেবী দক্ষিণাকালীর সকালের নিত্য পূজা ও দুপুরের ভোগ হয়। সন্ধ্যেবেলা প্রথমে অলক্ষ্মী পুজো করে অলক্ষ্মী বিদায় করা হয়। মন্দিরের সেবায়েতরা পাট কাঠি জ্বালিয়ে মন্দির প্রদক্ষিণ করেন। তারপর ওই আগুন প্রত্যেকে বাড়িতে নিয়ে যান। অলক্ষ্মী বিদায়ের পর গোটা মন্দির ধুয়ে ফেলে লক্ষ্মীপুজো শুরু হয়। লক্ষ্মী পুজো মূলত সন্ধ্যেবেলার পুজো। সেসময় মা কালীকে মহালক্ষ্মী রূপে পূজা করা হয়। মহালক্ষ্মীর পুজোয় খই, নাড়ু, মুড়কী, মিষ্টি, ফল, লুচি, তরকারি দেওয়া হয়। সন্ধ্যের পুজো শেষ হয়ে গেলে রাতে আরও একবার ভোগ নিবেদন করা হয়। সেই সময় খিচুড়ি, পোলাও, মাছ এবং পরমান্ন ভোগ দেওয়া হয় দেবীকে।