ব্রাসেলস : মাত্র ১১ বছর বয়সে পদার্থবিদ্যায় স্নাতক। এবার বিশ্বের বিস্ময় বালকের তকমা পেল অস্টেন্ডের লরেন সিমন্স। অ্যানটার্প ইউনিভার্সিটির এই বালকের মাথায় জুড়েছে বিশ্বের দ্বিতীয় কমবয়সী স্নাতকের শিরোপা। এর আগে ১০ বছরেই স্নাতক হওয়ার রেকর্ড রয়েছে মিখায়েল কার্নের নামে। ১৯৯৪ সালে এই বিশ্বরেকর্ড গড়ে মিখায়েল।


তিন বছরের ডিগ্রি কোর্স এক বছরেই সম্পূর্ণ করেছে লরেন। ৮৫ শতাংশ নম্বর নিয়ে পদার্থবিদ্যায় স্নাতক হয়েছে এই বালক। ছোট থেকেই লরেনের এই শিক্ষার গতি অবাক করেছে পরিচিতদের। বন্ধুরা জানিয়েছে, পড়াশোনায় এই গতির বহর লরেনের নতুন নয়। মাত্র ৮ বছর বয়সেই হাইস্কুল ডিপ্লোমা শেষ করে সে। হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করতে সময় লেগেছিল মাত্র দেড় বছর। এবার ফ্লেমিস ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টারস ডিগ্রি করতে চায় লরেন। 


স্বাভাবিকভাবেই লরেনের এই অস্বাভাবিক মেধা অবাক করেছে তার ইউনিভার্সিটির প্রফেসরদের। ব্রাসেলস টাইমসকে অ্যানটার্প ইউনিভার্সিটির মুখপাত্র জানিয়েছেন, ২০২০ সালের মার্চ থেকে ইউনিভার্সিটিতে পদার্থবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা শুরু করে লরেন। ইতিমধ্যেই পদার্থবিদ্যায় ৮৫ শতাংশ নম্বর নিয়ে স্নাতক হয়েছে সে। মাত্র এক বছরেই এই কোর্স শেষ করেছে লরেন। যা এক কথায় অনবদ্য। সেই কারণে ইউনিভার্সিটির সর্বোচ্চ ডিসটিঙ্কশন দেওয়া হয়েছে তাকে।


তবে কম সময়ে ডিগ্রি কোর্স শেষ করে বসে নেই এই বিস্ময় বালক। ইউনিভার্সিটির অধ্যাপকরা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই মাস্টার্স প্রোগ্রামের কিছু কোর্স করতে শুরু করেছে লরেন। কিছুদিনের মধ্যেই অফিশিয়ালি মাস্টার ডিগ্রি শুরু করবে সে। এখানেই শেষ নয়, মাস্টার ডিগ্রির পাশাপাশি চালিয়ে যাবে পিএইচডি করার পড়াশোনা। 


লরেন জানিয়েছে, ক্লাসিক্যাল মেকানিকস ও কোয়ানটাম ফিজিক্স সম্পর্কে সবকিছু জানতে চায় সে। মানুষকে অমরত্ব দেওয়াই তার জীবনের লক্ষ্য। কেউ মারা গেলে কীভাবে দেহের সব অংশ মেকানিক্যাল পার্টের মাধ্যমে বদলে দেওয়া যায়, তা নিয়েই চর্চা করছে সে। ইতিমধ্যেই নিজের লক্ষ্যে পৌঁছতে পরিকল্পনা শুরু করেছে ১১ বছরের লরেন।


তার পরিচিতরা জানিয়েছেন, এর আগে এইন্ডোভেন ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছিল বিশ্বের দ্বিতীয় কমবয়সী স্নাতক। কিন্তু সেখানে ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মতানৈক্য হওয়ায় মাঝপথেই ২০১৯ সালে কোর্স ছেড়ে দেয় সে। আসলে ছেলেকে ১০ বছরেই স্নাতক হিসাবে দেখতে চেয়েছিলেন অভিভাবকরা। ২৬ ডিসেম্বর লরেনের জন্মদিনের আগেই তাকে প্রথম ইউনিভার্সিটি গ্র্যাজুয়েট করে তুলতে চেয়েছিলেন তাঁরা। যদিও লরেনের অভিভাবকদের সঙ্গে এই নিয়ে মতভেদ তৈরি হয় ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষের। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, গ্র্যাজুয়েট হতে গেলে আরও অনেক পরীক্ষা দিতে হবে লরেনকে।যার জন্য আরও সময় লাগবে। যদিও সেই সময় দিতে রাজি হননি লরেনের বাবা-মা। অগত্যা পুরোনো ইউনিভার্সিটি ছেড়ে দেয় লরেন।