নয়াদিল্লি: নিজের ঘরে বসে যুদ্ধের বিবরণ দিচ্ছিলেন সাংবাদিক। সরাসরি সম্প্রচারিত হচ্ছিল তাঁর বক্তব্য। আর সেই সময়ই ঘটে গেল মারাত্মক ঘটনা। তীব্র শব্দে বাড়ির উপর আছড়ে পড়ল রকেট। টিভিতে খবর দেখছিলেন যাঁরা, সাংবাদিকের চিৎকার শুনতে পেলেন তাঁরা। স্ক্রিন জুড়ে তখন শুধুই ভাঙা দেওয়ালের অংশ। লেবাননের সাংবাদিকের বাড়িতে ইজরায়েলের ছোড়া রকেট আছড়ে পড়ার ওই ভিডিও ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। (Lebanese Journalist Hit by Missile)


মঙ্গলবার এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে। লেবাননের সাংবাদিক ফদি বোদিয়া একটি টেলিভিশন চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন। ব্যাখ্যা করছিলেন যুদ্ধ পরিস্থিতি, ইজরায়েলি আগ্রাসন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তাঁর বক্তব্য সরাসরি সম্প্রচারিত করছিল একটি টিভি চ্যানেল। সবে কথা বলা শুরু করেছেন ফদি, সেই সময়ই বিপত্তি ঘটে। (Fadi Boudia)


সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ভিডিও সামনে এসেছে, তাতে দেখা গিয়েছে, কানে ইয়ারফোন গোঁজা ফদি স্ক্রিনের সামনে বসেন প্রথমে। তাঁকে বলতে শোনা যায়, "যাঁরা ফোন, মেসেজ করে খোঁজ নিয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেককে ধন্যবাদ। ধন্যবাদ তাঁদের, যাঁরা অনুভূতি বুঝতে পেরেছেন। ঈশ্বরের কৃপায় আমি ঠিক আছি, ঈশ্বরের আশীর্বাদ রয়েছে মাথায়। মন থেকে ধন্যবাদ জানাই সকলকে।" 



সবে এইটুকু বলেছেন ফদি, সঙ্গে সঙ্গে তীব্র শব্দে কিছু আছড়ে পড়ার শব্দ শোনা যায়। ফদি যে চেয়ারে বসেছিলেন, তার পিছনের দেওয়ালটি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। চেয়ার থেকে উল্টে সামনের দিকে পড়ে যান ফদি। শোনা যায় তাঁর চিৎকার। কিছু ক্ষণের জন্য স্ক্রিন জুড়ে শুধুমাত্র ভাঙা দেওয়ালটিই দেখা যায়। এর পর ভিডিও কনফারেন্স বন্ধ করে বেরিয়ে যায় চ্যানেলটি। 


লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হেজবোল্লার প্রতি নরম অবস্থানের জন্য পরিচিত ফদি। তাঁর বাড়িতে রকেট আছড়ে পড়ার ঘটনা নেহাত কাকতালীয়, না কি পরিকল্পনা মাফিকই হামলা চালানো হয়, উঠছে প্রশ্ন। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ফদি হামলায় আহত হয়েছেন বটে। তবে প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন। ফদি নিজেও পরে সেই মর্মে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দেন। তবে এই ঘটনায় শিউরে উঠেছেন সকলে।


লেবাননের বুকে ইজরায়েলি হামলায় এখনও পর্যন্ত প্রায় ৬০০ মানুষ মারা গিয়েছেন, যার মধ্যে ৫০-এর বেশি শিশু রয়েছে। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সোমবার ভিডিও বার্তা দেন লেবাননবাসীকে। প্রাণে বাঁচতে হলে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বলেন সকলকে। হেজবোল্লাকে যখন পুরোপুরি নিকেশ করতে পারবে ইজরায়েল, ফের তাঁরা ঘরে ফিরতে পারবেন বলে জানান। কিন্তু প্যালেস্তাইনের পর লেবাননে ইজরায়েলের এই হামলার বিরুদ্ধে সমালচনায় সরব হয়েছে আন্তর্জাতিক মহল।