বেজিং: মাঝ আকাশে বিমানে হঠাৎ বিস্ফোরণের শব্দ। সেই সঙ্গে ধরে গেল আগুন। যাত্রীর ব্যাগে রাখা পাওয়ার ব্যাঙ্কের লিথিয়াম ব্যাটারি ফেটে বিপত্তি ঘটল। আর তাতেই হুলস্থুল কাণ্ড। জরুরি পরিস্থিতিতে অবতরণ করানো হল বিমানটিকে। বিমানের মধ্যে আগুনের সেই ভিডিও ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। (Lithium Battery Ignites Fire on Plane)

Continues below advertisement

চিনের হাংঝৌ থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার সোল যাওয়ার পথে Air China-র বিমানে এই ঘটনা ঘটে। বিমানের মধ্যে ওভারহেড কেবিনে রাখা এক যাত্রীর ব্যাগে বিস্ফোরণ ঘটে এবং তা থেকে আগুন জ্বলে ওঠে। এমতাবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে শাংহাই বিমানবন্দরে বিমানটিকে নামানো হয়। (Fire on Plane)

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানিয়েছে, রবিবার সকাল ৯টা বেজে ৪৭ মিনিটে CA139 বিমানটি হাংঝৌ বিমানবন্দর থেকে ওড়ে। দুপুর ১২টা বেজে ২০ মিনিটে দক্ষিণ কোরিয়ার গন্তব্যে পৌঁছে যাওয়ার কথা ছিল সেটির। কিন্তু এক যাত্রীর ব্যাগে রাখা লিথিয়াম ব্যাটারি ফেটে যায় এবং তা থেকে আগুন ধরে যায়। ধোঁয়ায় ভরে যায় বিমানটি। তাতে ১১টা নাগাদ শাংহাইয়ের পুদং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে হয়। 

Continues below advertisement

ওই বিমানটিতে ১৬০ জন যাত্রী সওয়ার ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। বিমানকর্মীরা তড়িঘড়ি পদক্ষেপ করাতেই বড় বিপদ ঘটেনি বলে জানিয়েছে Air China. জানা গিয়েছে, দুই বিমানসেবিকা অগ্নিনির্বাপক নিয়ে ছুটে যান। তাঁরাই আগুন নেভান। যাত্রীদেরও আসন ছেড়ে উঠতে দেওয়া হয়নি। 

বিমানে সওয়ার এক যাত্রী জানিয়েছেন, হঠাৎ তীব্র বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই দাউদাউ করে আগুন ধরে যায়। যে ওভারহেড কেবিনে রাখা ছিল ব্যাগটি, তার নীচের আসনে বসেছিলেন যাত্রীরা। অল্পের জন্য বিপদ এড়ানো গিয়েছে বলেই মনে করছেন যাত্রীরা। 

শাংহাইয়ে অবতরণের পর অন্য একটি বিমানে চাপিয়ে যাত্রীদের সোল পাঠানো হয়। এই ঘটনায় কেউ আহত হননি। বিমানেরও ক্ষতি হয়নি তেমন। কিন্তু লিথিয়াম ব্যাটারি নিয়ে ওই যাত্রী বিমানে উঠলেন কী করে, প্রশ্ন উঠছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, যাত্রীর ব্যাগে একটি পাওয়ার ব্যাঙ্ক রাখা ছিল। সেটিতেই ছিল লিথিয়াম ব্যাটারি। তবে বিমান সংস্থার তরফে কিছু জানানো হয়নি এ নিয়ে। 

লিথিয়াম ব্যাটারি থেকে বিমানে এই প্রথম বিপত্তি ঘটল না। মে মাসেই হাংঝৌ থেকে শেংঝেন যাওয়ার পথে চায়না সাদার্ন এয়ারলাইন্সের বিমান ধোঁয়ায় ভরে যায়। উড়ানের ১৫ মিনিট পরই বিমানবন্দরে ফিরে আসতে হয় বিমানটিকে। পরে দেখা যায়, এক যাত্রীর ক্যামেরা ব্যাটারি এবং পাওয়ার ব্য়াঙ্ক থেকে বিপত্তি বাঁধে। জানুয়ারি মাসে Air Busan বিমানে পাওয়ার ব্যাঙ্ক থেকে আগুন লাগে। সেই বিমানে ১৬৯ জন যাত্রী সওয়ার ছিলেন। ছিলেন সাত বিমানকর্মী। বেশ কয়েক জন আহত হন ওই ঘটনায়।

ফেডারেশন এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের তরফে লিথিয়াম ব্যাটারি নিয়ে বার বার সতর্ক করা হয়েছে। তা থেকে বিস্ফোরণের ঝুঁকি রয়েছে বলে জানানো হয়। স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, ল্যাপটপ এবং পোর্টেবল ব্যাটারিতে লিথিয়াম ব্যাটারি থাকে। বিমানবন্দরে জিনিসপত্র চেকিংয়ের সময় লিথিয়াম ব্য়াটারি থাকলে, তা নিয়ে নেওয়া হয়। পৃথিবীর প্রায় সর্বত্রই এ নিয়ে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আমেরিকার Transportation Security Administration লিথিয়াম ব্যাটারি নিষিদ্ধই করেছে বিমানে। ১০০ ওয়াট-আওয়ারের নীচে হলে তা ক্যারি অন লাগেজে রাখার অনুমতি রয়েছে। চিনেও কড়া নিয়ম কানুন রয়েছে এ নিয়ে। চলতি বছরের ২৮ জুন থেকে সার্টিফায়েড সেফটি মার্কিং বিহীন পাওয়ার ব্যাঙ্ক নিয়ে বিমানে ওঠা নিষিদ্ধ। হংকংয়ে ওভারহেড বিনে পাওয়ার ব্যাঙ্ক রাখা নিষিদ্ধ। হয় আসনের নীচে, নয়ত সিট পকেটে রাখতে হয়।