কলকাতা: লিভ-ইন (Live In Relationship) করতে চাইলে এর পর থেকে হয়তো জেলা প্রশাসনকে জানানো আইনি ভাবে বাধ্যতামূলক হবে উত্তরাখণ্ড (Uttarakhand On Uniform Civil Code)।  বিজেপি শাসিত এই রাজ্যের বিধানসভায় আজ সকালে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি সংক্রান্ত বিল পেশ হয়েছে। বিলটি একবার পাশ হয়ে আইনে পরিণত হলে উত্তরাখণ্ডের বাসিন্দাদের লিভ-ইন করার ক্ষেত্রে কিছু নিয়মবিধি মেনে চলা আইনসিদ্ধ ভাবে বাধ্য়তামূলক হয়ে দাঁড়াবে বলে জানাচ্ছে ওয়াকিবহাল মহল। স্বাভাবিক ভাবেই এখন প্রশ্ন, তা হলে কি একেবারে সরাসরি ব্যক্তিগত পরিসরে হস্তক্ষেপ করার পথই নেবে উত্তরাখণ্ড সরকার?


কী হতে পারে?
রাজ্যের বিধানসভায় অভিন্ন দেওয়ানি বিধি সংক্রান্ত বিল পাশ হয়ে আইনের মর্যাদা পেলে উত্তরাখণ্ডে যাঁরা লিভ-ইন করছেন বা লিভ-ইন করার চিন্তাভাবনা করছেন, তাঁদের জেলা প্রশাসনের কাছে বিষয়টি নথিভুক্ত করতে হবে। সূত্রের খবর, এই জন্য একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা হচ্ছে। সেখানে লিভ-ইন সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য় নেওয়া হবে। পরে ডিস্ট্রিক্ট রেজিস্ট্রার সেই তথ্যগুলির সত্যতা যাচাই করে দেখবেন। সম্পর্কটি বৈধ কিনা, সেটা খতিয়ে দেখাই এর উদ্দেশ্য। প্রয়োজনে তিনি যাঁরা লিভ-ইন করছেন, তাঁদের মধ্যে যে কোনও এক জন বা দু'জনকে তিনি দেখেছেন। অন্য কাউকেও ডেকে পাঠাতে পারেন, এমনই ব্যবস্থা রয়েছে এই বিলে। রেজিস্ট্রেশন যদি না হয়, তা হলে ডিস্ট্রিক্ট রেজিস্ট্রারকে লিখিত ভাবে তার কারণ জানাতে হবে। বিলে জানানো হচ্ছে, 'লিভ-ইন' সম্পর্ক শেষ করতে হলে নির্দিষ্ট ফরম্যাটে লিখিত বিবৃতি জরুরি যার ভিত্তিতে পুলিশি তদন্তও হতে পারে। তবে এক্ষেত্রে রেজিস্ট্রারকেও মনে করতে হবে, সম্পর্ক ভাঙার কারণটি 'যর্থাথ নয়'  বা 'সন্দেহজনক।' সম্পর্কে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের বয়স ২১-র কম হলে, অভিভাবকদেরও জানাতে হবে। 


সাজার ব্যবস্থা...
আইনি ভাবে এই নিয়ে রীতিমতো কড়া ভাবে এগোতে চাইছে উত্তরাখণ্ড প্রশাসন। অভিন্ন দেওয়ানি সংক্রান্ত বিলে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, লিভ-ইন সম্পর্কের ব্যাপারে নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে জেলা প্রশাসনকে না জানালে বা ভুয়ো তথ্য দিলে তিন মাসের জেল হতে পারে, ২৫ হাজার টাকা জরিমানা হতে পারে বা একসঙ্গে দুটোই হতে পারে। এমনকি, রেজিস্ট্রেশন সামান্য দেরি, মাসখানেক মতো দেরি হলেও তিন মাস কারাবাসের খাঁড়া ঝুলবে মাথার উপর। বা ১০ হাজার টাকা জরিমানাও হতে পারে। তবে এসবের পাশাপাশি একটি বিষয়ও স্পষ্ট জানানো হয়েছে এই বিলে। লিভ-ইন সম্পর্ক থেকে যে সন্তান জন্ম নেবে, তার আইনি স্বীকৃতিও থাকবে। 
কিন্তু প্রশ্ন একটাই। এভাবে ব্যক্তিগত পরিসরে সরাসরি প্রশাসন তথা সরকারের হস্তক্ষেপ কতটা গ্রহণযোগ্য? আপাতত তুমুল আলোচনা চলছে দিকে দিকে। বিলটি আইনে পরিণত হলে কী হয়, সেটিই দেখার। 


আরও পড়ুন:পুরুষের তুলনায় Autoimmune Disease-র আশঙ্কা মহিলাদের বেশি কেন? নেপথ্য়ে X ক্রোমোজোম? আলোড়ন গবেষণায়