নয়াদিল্লি: লোকসভায় সাংসদদের বসার আসনে রদবদল ঘটল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসন আগের জায়গাতেই রয়েছে। এক নম্বর আসনটিই বরাদ্দ রয়েছে তাঁর জন্য। একদা পিছনে পড়ে গেলেও, প্রথম সারিতে তুলে আনা হল কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ীকে। তৃণমূলের একজন সাংসদ প্রথম সারিতে রয়েছেন। লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গাঁধী-সহ কংগ্রেসের মোট চারজন প্রথম সারিতে জায়গা পেলেন। (Lok Sabha Seats Allotment)
NDA-তে বিজেপি-র শরিকদলের প্রতিনিধিদের কয়েক জনকেও প্রথম সারিতে তুলে আনা হয়েছে। লোক জনশক্তি পার্টির চিরাগ পাসোয়ান প্রথম সারিতে জায়গা পেলেন এবার। উল্লেখযোগ্য ভাবে, তৃণমূল সাংসদরা লোকসভায় বিজেপি এবং কংগ্রেস, দুই দলের থেকেই সমান দূরত্ব বজায় রেখে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। (Lok Sabha Seating Arrangement)
লোকসভায় বসার আসন নিয়ে সব দলের মতামত নেওয়া হয়। সেই মর্মে ২৯ নভেম্বর লোকসভায় কে, কোথায় বসবেন, তার তালিকা প্রকাশ করেছে লোকসভা সেক্রেট্যারিয়ট। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার দফতর ওই আসন বিন্যাসের দায়িত্ব ছিল। ওই তালিকা অনুযায়ী, একেবারে এক নম্বর আসনে বসবেন মোদি। দুই এবং তিন নম্বর আসনে যথাক্রমে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বসবেন।
এতদিন লোকসভায় দ্বিতীয় সারিতে, ৫৮ নম্বর আসনে বসতেন গডকড়ী। মোদি-শাহের সঙ্গে তাঁর রাজনৈতিক দূরত্বও চর্চার বিষয় ছিল দীর্ঘদিন। এবার তাঁকে একেবারে শাহের পাশে, চার নম্বর আসনে তুলে আনা হয়েছে। বিজেপি-র আর এক বর্ষীয়ান নেতা শিবরাজ সিংহ চৌহানকেও প্রথম সারিতে তুলে আনা হয়েছে, যিনি এতদিন ৫৯ নম্বর আসনে বসতেন।
পাশাপাশি জনতা দল (সেক্যুলার) নেতা তথা ভারী শিল্প মন্ত্রী এইচডি কুমারস্বামী, এবং সংযুক্ত জনতা দলের নেতা তথা মৎস্য মন্ত্রী রাজীব রঞ্জন সিংহ, তেলুগু দেশম পার্টির নেতা তথা বিমান পরিবহণ মন্ত্রী রামমোহন নায়ডু, ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্প মন্ত্রী তথা হিন্দুস্তানি আওয়ামি মোর্চা নেতা জিতন রাম মাঝিকেও NDA কোটায় প্রথম সারিতে তুলে আনা হয়েছে। এঁরা সকলেই কেন্দ্রে বিজেপি-র শরিক। এবারের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। শরিকদের বলে সরকার গড়তে হয়েছে। তাই শরিকদের সংসদের প্রথম সারিতে জায়গা দেওয়ার সিদ্ধান্ত বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। যদিও তৃণমূলের দাবি, সুদীপের কাছাকাছি দলের কাউকে রাখা হয়নি। এ ব্যাপারে তাদের কিছু জানানো হয়নি বলে দাবি জোড়াফুল শিবিরের।
বিরোধীদের বসার আসনেও ব্যাপক রদবদল হয়েছে। ১৭তম লোকসভায় কংগ্রেসের সনিয়া গাঁধী, অধীর রঞ্জন চৌধুরী, বিজু জনতা দলের পিনাকি মিশ্ররা যেখানে প্রথম সারিতে বসতেন, এবার প্রথম সারির আসন বরাদ্দ হয়েছে রাহুল, কেসি বেণুগোপাল. গৌরব গগৈ, কে সুরেশদের জন্য। কংগ্রেসের তরফে রাহুল ছাড়া বাকিদের জন্য প্রথম সারির আসন চাওয়া হয়েছিল। বিরোধী দলনেতা হিসেবে রাহুলকেও প্রথম সারিতে রাখা হয়েছে। DMK-র টিআর বালু এবং তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম সারিতে বসার জায়গা পেয়েছেন। প্রথম বার সাংসদ নির্বাচিত হওয়া প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা চতুর্থ সারিতে বসার জায়গা পেয়েছেন। সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব তৃণমূলের সুদীপের পাশে বসবেন। দিল্লি সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূলের তরফে স্পিকারকে চিঠি দেওয়া হয়, যাতে কংগ্রেসের থেকে দূরে আসন বরাদ্দর আবেদন জানানো হয়। এবার একেবারে মাঝখানে বসতে চলেছেন তৃণমূলের সাংসদরা, বিজেপি এবং কংগ্রেস, দুই দলের থেকেই সমান দূরত্বে।