পুরী: কেরলের তিরুবনন্তপুরমের শ্রী পদ্মনাভস্বামী মন্দিরের সাপের কাহিনি হোক বা মায়ানমারের মান্দালে মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তরের নীচে থাকা গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ রক্ষাকারী বার্মিজ অজগরের নাচের কিংবদন্তিই হোক গোপন সম্পদের চারপাশে কুণ্ডলীবদ্ধ সাপের পাহারা দেওয়ার কাহিনি প্রচলিত আছে নানা হিন্দু ও বৌদ্ধ স্থাপত্যকে ঘিরে। জগন্নাথ মন্দিরের রত্ন ভাণ্ডারও তার ব্যতিক্রম নয়। 


কথিত আছে, জগন্নাথদেবের দুর্মূল্য রত্নরাজি সহ যাবতীয় মূল্যবান জিনিসের এই ভাণ্ডারের ভিতর থেকে শোনা যায় সাপেদের হিস হিস শব্দ। জগন্নাথদেবের রত্ন ভাণ্ডার কি পাহারা দেয় নাগ-নাগিনের দল? রবিবার অর্থাৎ উল্টোরথের আগেই খুলল নীলমাধবের ঐশ্বর্যের ভাঁড়ার। ৪৬ বছর পর, খোলা হল পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রত্ন ভাণ্ডার। ঘড়ির কাঁটায় তখন, ঠিক দুপুর ১টা বেজে ২৮ মিনিট। মাহেন্দ্রক্ষণে খোলা হয় রত্নভাণ্ডারের দরজা। 


সেই সময় কী সত্যিই জগন্নাথদেবের 'বিবিধ রতন' সহ বৈদুর্য মণি পাহারা দিচ্ছিল নাগদেবতা? পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রত্নভাণ্ডারকে ঘিরে মানুষের কৌতূহল দীর্ঘদিনের। ভাণ্ডারে বৈদুর্যমণি, নীলকণ্ঠমণি-সহ অসংখ্য মূল্যবান রত্ন রয়েছে বলে দাবি পাণ্ডাদের। ১৯৭৮ সালে শেষবার অডিট হয়েছিল রত্ন ভাণ্ডারের। ২০১৮ সালে একবার রত্ন ভাণ্ডার খোলার চেষ্টা করা হয়। ১৬ জনের দল ঢোকার চেষ্টা করেন ভিতর ভাণ্ডারে। কিন্তু কোনও কারণে মাত্র ৪০ মিনিটের মধ্যেই সেই অভিযান বন্ধ করে দেওয়া হয়। 


তবে রবিবার টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে পুরীর ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর সিদ্ধার্থ শঙ্কর জানিয়েছেন, 'এত বছর পর যখন জগন্নাথ মন্দিরের রত্নভাণ্ডার খোলা হল সেই সময় কোনও সাপ ওখানে ছিল না। এমনকী কোনও পোকামাকড় বা অন্য কোনও সরীসৃপও পাওয়া যায়নি ওখানে।' 


উল্লেখ্য, রত্নভাণ্ডারের দুটি ভাগ, বাহির ভাণ্ডার ও ভিতর ভাণ্ডার। জগন্নাথদেবের যা কিছু আভূষণ থাকে বাহির ভাণ্ডারে। আর ভিতর ভাণ্ডারে থাকে মূল্যবান সামগ্রী, অলঙ্কার। বছরে ১৫ দিন বাহির ভাণ্ডার খোলা হয়, বন্ধ থাকে ৩৫০ দিন। বহু বছর খোলা হয়নি ভিতর ভাণ্ডার। 


আরও পড়ুন, উল্টোরথের দিনেই রাশিচক্রে শনির স্থানবদল, প্রভাব পড়তে চলেছে কোন কোন রাশিতে?


শোনা যায়, রত্ন ভাণ্ডারে রয়েছে অসংখ্য কাঠের সিন্দুক। সেগুলির উচ্চতা ৩ ফুট, লম্বায় ৯ ফুট। ১৯৭৮ সালের অডিট অনুযায়ী, রত্ন ভাণ্ডারে রয়েছে ১ হাজার ৩৩৩ রকমের অলঙ্কার। যার মধ্যে ৪৫৪ ধরনের খাঁটি সোনার অলঙ্কার রয়েছে। কিছু কিছু অলঙ্কারের ওজন এক কেজির বেশি। মোট সোনার অলঙ্কারের ওজন ১২ হাজার ৮৮৩ ভরি। আছে ২৯৩ রকমের রুপোর গয়না, যেগুলির ওজন ২২ হাজার ১৫৩ ভরি। 


 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে