প্রয়াগরাজ: অমৃত স্নান ঘিরে বিপত্তি মহাকুম্ভে। ভোরের আলো ফোটার আগে সেখানে পদপিষ্ট হলেন অনেকে। কমপক্ষে ১০ জন মারা গিয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মৌনী অমাবস্যায় 'অমৃত স্নান' ঘিরে ধাক্কাধাক্কি, ঠেলাঠেলি শুরু হয়ে যায়। সেই ভিড়ে অনেকে পদপিষ্ট হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। আহত হয়েছেন পুণ্যার্থীদের অনেকেই, যার মধ্যে মহিলারাও রয়েছেন। (Mahakumbh Stampede Situation)




বুধবার ভোরে মহাকুম্ভে পদপিষ্ট হন অনেকে। তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছয় অ্যাম্বুল্যান্স। আহত মহিলাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে অনেকে শ্বাসকষ্টে ভুগছেন বলেও জানা গিয়েছে। কুম্ভমেলা প্রাঙ্গনের, সেক্টর ২ হাসপাতালে ২৫-৩০ মহিলা ভর্তি বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনার জেরে গঙ্গায় 'অমৃত স্নান'ও পিছিয়ে যায়। (Mahakumbh 2025)


প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সঙ্গমের কাছে ১১ থেকে ১৭ নম্বর স্তম্ভের মধ্যে পদপিষ্ট হন বহু মানুষ। এই ঘটনার জেরে বুধবার অমৃত স্নানে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আখরা পরিষদ। মেলা কর্তৃপক্ষের তরফে মাইকিং করে পুণ্যার্থীদের ঘাট থেকে সরে যেতে বলা হয়। 



সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কর্নাটকের বাসিন্দা সরোজিনী নামের এক পুণ্যার্থী বলেন, "দু'টি বাসে চেপে আমরা ৬০ জন এসেছিলাম। আমাদের গ্রুপে আমরা ন'জন ছিলাম। হঠাৎ দেখলাম ধাক্কাধাক্কি হচ্ছে। আমরা ভিড়ের মধ্যে আটকে পড়ি। অনেকে মুখ থুবড়ে পড়েন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।"



জগৎগুরু সাই মা লক্ষ্মীদেবী পিটিআই-এ বলেন, "মৌনী অমাবস্যা শুধুমাত্র আমাদের সন্ন্যাসীদের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়,  সমস্ত হিন্দুদের কাছে এই দিনটি গুরুত্বপূর্ণ। অনেকে নীরবেই পালন করেন দিনটি। আত্মার বিকাশ ঘটে।" মৌনী অমাবস্যার দিন পুণ্যস্নানের জন্য আগে থেকেই উত্তরপ্রদেশ সরকার করা নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিল। গাড়ি ঢোকা নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু তার পরও বিপত্তি এড়ানো গেল না। 



মৌনী অমাবস্যায় 'অমৃত স্নান'-এর জন্য মুখিয়ে থাকেন পুণ্যার্থীরা। এ বছর আবার মহাকুম্ভ, ফলে দিনটির গুরুত্ব আরও বেশি ধর্মপ্রাণ মানুষজনের কাছে। কারণ এবারের মহাকুম্ভে 'ত্রিবেণী যোগ' ও রয়েছে, যা ১৪৪ বছরে একবারই ঘটে। তাই লক্ষ লক্ষ মানুষ মহাকুম্ভে জড়ো হয়েছেন। আজ ত্রিবেণী সঙ্গমে প্রা ১০ কোটি মানুষ জড়ো হতে পারেন বলে আগেই ইঙ্গিত মিলেছিল। মৌনী অমাবস্যায় 'অমৃত স্নান'-এর জন্য ভিড় করেন তাঁরা। আর তখনই ঘটে যায় অঘটন।




স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, মৌনী অমাবস্যায় পুণ্যস্নানের জন্য প্রায় ১০ হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। ত্রিবেণী সঙ্গমে ডুব দেওয়ার জন্য ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে যায়। একটা সময় পর নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় পরিস্থিতি। এই ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে ফোন করেছেন। সবরকমের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।