মুম্বই : কদিন ধরেই পূর্ণ লকডাউনের বিষয়ে কানাঘুষো চলছিল মহারাষ্ট্রের অন্দরে। সম্প্রতি রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সর্বদলীয় বৈঠকের ডাক দেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি যে উদ্বেগজনক তা প্রকাশ্যেই স্বীকার করে নেন মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ তোপে। তিনি বলেন, 'বর্তমানে রাজ্যের পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে ২-৩ সপ্তাহের পূর্ণ লকডাউন প্রয়োজন। আমরা আশা করছি, যে সকল ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তাতে ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।রাজ্যে করোনা আক্রান্তের উর্ধ্বমুখী গ্রাফের কথা চিন্তা করে কেন্দ্রীয় সরকারের পরামর্শ ও সাহায্য নেওয়া হবে।'
মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর রাত সাড়ে ৮টায় বার্তা দেওয়ার কথা প্রকাশ্যে আসতেই সেই জল্পনা আরও গতি পায়। এ প্রসঙ্গে মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী আসলাম শেখ বলেন, মঙ্গলবার থেকে নতুন করোনা বিধিনিষেধ চালু হবে রাজ্যে। ইতিমধ্যেই করোনা প্রতিরোধে সর্বদলীয় বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কোভিড মোকাবিলায় বিরোধী নেতাদের সঙ্গেও কথা বলেছেন। পরামর্শ নেওয়া হয়েছে রাজ্যের কোভিড ১৯ টাস্ক ফোর্সের। সেখানে বাদ দেওয়া হয়নি শিল্পপতিদেরও। উইকেন্ড লকডাউন, নাইট কার্ফু চালু হয়েছে রাজ্যে। এবার করোনা ভাইরাসের চেন ভাঙতে নতুন কিছু বিধিনিষেধের পথে হাঁটবে রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার রাতে মহারাষ্ট্রবাসীকে তাই জানাবেন মুখ্যমন্ত্রী। সারা রাজ্যে জন্যই লাগু হবে সেই 'স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর। মঙ্গলবার সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্য়মে মহারাষ্ট্রবাসীকে বার্তা দেবেন মুখ্যমন্ত্রী।
রাজ্যের করোনা বুলেটিন অনুযায়ী, রবিবার ভয়াবহ পরিস্থিতি হয় রাজ্যে। একদিনে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ায় ৬৩,২৯৪ জন। এখনও পর্যন্ত মহারাষ্ট্রে একদিনে কোভিড পজিটিভের সংখ্যায় যা সবথেকে বেশি। কিন্তু দেখা যায়, সোমবারই এই সংখ্যাটা ৫২,৭৫১-তে নেমে আসে। যাতে অবাক হন অনেকেই। মনে করা হচ্ছে, সপ্তাহ শেষে অপেক্ষকৃত কম করোনা পরীক্ষার জন্যই এই সংখ্যা সামনে এসেছে। করোনা যে রাজ্যে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, মৃত্যুর সংখ্যার দিকে তাকালেই তা বোঝা যাবে। এখনও পর্যন্ত মহারাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ৫৮,২৪৫ জন।
এদিকে, করোনা পরিস্থিতি বাগে আনতে রাজ্যে আরও ৫,৩০০ বেডের ব্যবস্থা করেছে মহারাষ্ট্র সরকার। যার মধ্যে ৭০ শতাংশ বেডের সঙ্গে অক্সিজেনের সুবিধা রয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী আসলাম শেখ। তিনি আরও জানান, রাজ্যে প্রস্তাবিত লকডাউন নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে খোদ কোভিড ১৯ টাস্কফোর্সের মধ্যে। কেউ একুশ দিনের লকডাউনের পক্ষপাতী, তো অনেকে চোদ্দো দিন লকডাউন চাইছেন।