মহারাষ্ট্র: করোনায় জেরবার দেশ। যদিও দ্বিতীয় ঢেউ-এর ভয়াবহ সময় কেটে গিয়েছে বলেই দাবি করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তবু সংক্রমণ এখনও নির্মূল হয়নি। করোনামুক্ত হওয়ার স্বপ্ন এখনও অধরাই। আর একেই হাতিয়ার করে সংক্রমণ দূরীকরণের লক্ষ্যে নামল মহারাষ্ট্র সরকার। জানালো, করোনামুক্ত তিনটি গ্রামকে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় স্থানাধিকারীর নিরিখে পুরস্কৃত করা হবে। পুরস্কারে দেওয়া হবে টাকা। যেই অঙ্কটাও কার্যত অবাক করার মতোই।
মহারাষ্ট্র প্রশাসন জানিয়েছে, করোনামুক্ত হওয়ার নিরিখে যেই গ্রাম প্রথম স্থানে থাকবে, সেই গ্রাম ৫০ লক্ষ টাকা পাবে, দ্বিতীয় স্থানে থাকা গ্রাম পাবে ২৫ লক্ষ টাকা এবং তৃতীয় স্থানে যেই গ্রাম থাকবে সেই গ্রাম ১৫ লক্ষ টাকা পাবে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রের খবর, গুজরাটে যেই গ্রাম পঞ্চায়েত কোভিড-১৯ সংক্রমণ দূর করতে ভাল কাজ করবে তাঁদেরকেই সম্মানিত করা হবে বলে জানানো হয়েছে। সরকার আশাবাদী যে, এই পদ্ধতি অবলম্বনে সংক্রমণ দূরীকরণের উৎসাহ পাবেন গ্রাম পঞ্চায়েত এবং সাধারণ মানুষও।
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা অনেকটাই সামলে উঠেছে মহারাষ্ট্র। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৬০ হাজার থেকে কমে গত কয়েক দিনে ২০ হাজারে নেমেছে। রবিবার মহারাষ্ট্রে নতুন করে ১৮ হাজার ৬০০ জন করোনায় সংক্রমিত হন। এনিয়ে সেখানে মোট সংক্রমিত ৫৭ লক্ষ ৩১ হাজার ৮১৫। রাজ্যে সুস্থতার হার ৯৩.৫৫ শতাংশ। শনিবার সংক্রমিত হয়েছিলেন ২০ হাজার ২৯৫ জন। মৃত্যু হয়েছিল ৪৪৩ জনের।
এ ছাড়া রাজ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস তথা মুকোরমাইকোসিসে আক্রান্ত প্রায় ৩ হাজার জন। তবে উদ্বেগ বাড়ছে অন্যত্র। হিসেব বলছে, রাজ্যের আহমদনগর জেলাতে মে মাসে আক্রান্ত হয়েছে ৮ হাজারেরও বেশি শিশু এবং কিশোর।
তাই কড়া লকডাউ না হলেও করোনা মোকাবিলায় বিধিনিষেধ বজায় রেখেছে মহারাষ্ট্র সরকার। আরও ১৫দিন বিধিনিষেধ জারি থাকবে বলে গত রবিবার অর্থাৎ ৩০ মে এমনটাই জানিয়েছেন মহারাষ্ট্র্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে।
করোনার তৃতীয় ঢেউ নিয়ে রাজ্যবাসীকে সতর্ক করে দেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, রাজ্যে যদি তৃতীয় ঢেউ আসে, তাহলে মেডিক্যাল অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। তৃতীয় ঢেউ শিশুদের আক্রান্ত করতে পারে। কিন্তু, চিন্তার কিছু নেই। কারণ, বিশেষজ্ঞরা বলেন, শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক। কিন্তু তাতেও যদি সংক্রমিত হয় শিশুরা, সেক্ষেত্রে আমাদের যত্ন নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, মহারাষ্ট্রে কয়েকটি জেলা রয়েছে যেখানে সংক্রমণ বাড়ছে। মূলত গ্রামীণ এলাকায়। এটা আমাদের থামাতে হবে। করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের সতর্কবার্তা রয়েছে। এটা আমাদের জীবন-যাপনের উপর নির্ভর করছে। ভাইরাসের মধ্যে পার্থক্য আছে। এখানে মিউটেশন হয়েছে। এটা দ্রুত ছড়ায়।