নয়াদিল্লি: আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার রয়েছে মহুয়া মৈত্রের (Mahua Moitra), কোনও ভাবে সেই অধিকার থেকে তাঁকে বঞ্চিত করা যাবে না, জানাল দিল্লি হাইকোর্ট। টাকার বিনিময়ে সংসদে আদানিদের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলার অভিযোগ প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মহুয়ার বিরুদ্ধে। সেই নিয়ে প্রাক্তন বন্ধু, আইনজীবী জয় অনন্ত দেহদ্রাইয়ের সঙ্গে আরও তিক্ত হয়েছে মহুয়ার সম্পর্ক। প্রকাশ্যে পরস্পরের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তাঁরা। মহুয়ার বিরুদ্ধে ২ কোটি টাকার মানহানি মামলাও ঠুকেছেন অনন্ত। সেই মামলার শুনানিতেই এমন মন্তব্য করল দিল্লি হাইকোর্ট। (Cash for Queries Case)
মহুয়ার বিরুদ্ধে মানহানি মামলার পাশাপাশি, প্রাক্তন মহুয়া যাতে প্রকাশ্যে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও মন্তব্য করতে না পারেন, আদালতকে সেই মর্মে নির্দেশ দিতে আবেদন জানিয়েছিলেন অনন্ত। কিন্তু সোমবার সেই মামলার শুনানিতে আদালত বলে, "আপনি যদি প্রকাশ্যে অভিযোগ তোলেন, তাহলে ওঁরও (মহুয়া) নিজের পক্ষ তুলে ধরার অধিকার রয়েছে। অবশ্যই মিথ্যে দাবি করতে পারেন না উনি। দু'পক্ষই যদি প্রকাশ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি করলে না চান, তা আলাদা বিষয়। কিন্তু আপনি যদি প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেন, তাহলে ওঁরও (মহুয়া) আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার রয়েছে।"
আদালতে মহুয়ার আইনজীবী জানান, কোনও অপমানসূচক মন্তব্য করেননি মহুয়া। তিনি যা বলেছেন, তার যথেষ্ট কার্যকারণও রয়েছে। এর পাল্টা অনন্তের আইনজীবী জানান, মহুয়া এবং অনন্তের মধ্যে 'পাওয়ার গ্যাপ' রয়েছে। অর্থাৎ সমাজে অনন্তের তুলনায় মহুয়া বেশি প্রভাবশালী। তাঁর মন্তব্যে অনন্তের কর্মজীবনেও প্রভাব পড়ছে।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: পুলিশকে না জানিয়ে মধ্যরাতে মহিলাদের উপর অত্যাচারের অভিযোগে ফের মমতার নিশানায় এনআইএ
এর প্রেক্ষিতে আদালত জানায়, অতি সম্প্রতি মহুয়ার তরফে তেমন কোনও মন্তব্য শোনা যায়নি। তবে মহুয়া এবং অনন্তের সম্পর্ক যে জায়গায় পৌঁছয়, তাতে পরস্পরকে দোষারোপ করা স্বাভাবিক। কিন্তু এক্ষেত্রে পরস্পরকে নীচে নামাতে কোনও কসুর করেননি তাঁরা, যা তাঁদের ভাবমূর্তির জন্য মোটেই শুভ নয়। মহুয়ার মন্তব্যে অনন্তের কর্মজীবনে কতটা প্রভাব পড়েছে, তা আগামী দিনে পর্যালোচনা করে দেখা হবে বলে জানিয়েছে আদালত। মহুয়া যদি সত্যিই অনন্তের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ এনে থাকেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ করা হবে বলে জানানো হয়। তবে তার আগে দু'পক্ষেরই সংযত হওয়া উচিত বলে জানায় আদালত। আগামী ২৫ এপ্রিল আবারও শুনানি হবে।
সংসদে টাকার বিনিময়ে আদানিদের নিয়ে প্রশ্ন করার অভিযোগে গত বছর ৮ ডিসেম্বর সাংসদপদ বাতিল হয় মহুয়ার। সেই নিয়ে তদন্ত চলাকালীন সম্প্রতি তাঁর বাড়ি এবং দফতরে হানাও দেয় কেন্দ্রীয় সংস্থা। বিষয়টি নিয়ে মহুয়ার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে নানা মন্তব্য, টিপ্পনি করতে শোনা গিয়েছিল অনন্তকে। পাল্টা জবাব দেন মহুয়াও। মহুয়ার দাবি ছিল, সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর যে তিক্ততা জন্ম নেয় তাঁদের মধ্যে, তারই প্রতিশোধ তুলছেন অনন্ত।