নয়াদিল্লি : "পাকিস্তানে একটা অগ্নি-৫ ফেলে দিলে, গোটা শহর ধূলিসাৎ হয়ে যাবে।" পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে উত্তেজনার আবহে হুঙ্কার ছাড়লেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জিডি বক্সি।
কাশ্মীরের বুকে ভয়ঙ্কর জঙ্গি হামলার নেপথ্য়ে সরাসরি পাকিস্তানের হাত থাকার প্রমাণ স্পষ্ট হয়েছে। যার ফলে দেশজুড়ে আরও জোরাল হয়েছে, পাকিস্তানকে দৃষ্টান্তমূলক জবাব দেওয়ার দাবি ! এই আবহে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রত্যাঘাতে এদিন সেনার তিন বাহিনীকেই পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। 'কখন, কোথায়, কীভাবে প্রত্যাঘাত করা হবে, সেই টার্গেট ঠিক করবে সেনাবাহিনী।সন্ত্রাসবাদকে কড়া জবাব দিতে হবে, এটাই আমাদের সংকল্প।' সেনাবাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়ে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
উভয় দেশের সম্পর্কে চরম উত্তেজনার আবহে এবার পাকিস্তানকে তাদের জায়গা দেখিয়ে দিলেন জিডি বক্সি। সংবাদ সংস্থা ANI-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "পাকিস্তানে এখন আতঙ্ক ছড়িয়েছে। করাচি থেকে জাহাজ বের করে স্কার্দু গিলগিট বাল্টিস্তানে পাঠাচ্ছে। ওখান থেকে দেখছে ভারতের নৌবাহিনী করাচির দিকে যাচ্ছে কি না। ঘাম ছুটে যাচ্ছে ওদের। ভারতেরও একটা সুযোগ আছে, বাগরাম বিমানঘাঁটিতে বাহিনী নামাক। তালিবানের সঙ্গে কথা বলে নিক। ওদিক থেকেও হামলা করুক।"
এদিকে চাপের মুখে পাকিস্তানের দিক থেকে পরমাণু-হুমকি এসেছে। সে প্রসঙ্গে চাঁচাছোলা ভাষায় অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল বলেন, "পরমাণু-ধমকি দিয়ে দেওয়া খুব সহজ। কিন্তু, তা করা খুব কঠিন। এমন নয় যে, শুধু পাকিস্তানের কাছে পরমাণু-অস্ত্র আছে। ১৮০-র কাছাকাছি পরমাণু অস্ত্র আছে আমাদের কাছে। পাকিস্তানে একটা অগ্নি-৫ ফেলে দিলে, গোটা শহর ধূলিসাৎ হয়ে যাবে। কাকে ধমকি দিচ্ছেন ? কাদের বোকা বানাচ্ছেন ?"
কখনও মরুভূমিতে ধুলোর ঝড় তুলছে ট্যাঙ্ক। কখনও আরব সাগর থেকে ছোড়া ব্রহ্মসের গর্জন কাঁপিয়ে দিচ্ছে আকাশ। পহেলগাঁওয়ের হত্যালীলার প্রতিশোধ নিতে প্রস্তুত সেনা-নৌ সেনা-বায়ু সেনা।
হামলার ৭ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও ধরা পড়েনি জঙ্গিরা। তবে তাদের খোঁজে কাশ্মীরের কোনায় কোনায় চলছে চিরুনি তল্লাশি। ঘন জঙ্গল থেকে দুর্গম পার্বত্য় এলাকা তন্ন তন্ন করে খুঁজছে সেনা-আধা সেনা ও পুলিশ। রাস্তাঘাটে চলছে নাকা চেকিং ও কড়া নজরদারি। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহানের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। উপস্থিত ছিলেন সেনার তিন বাহিনীর প্রধানও। সূত্রের খবর, বৈঠকে তিন বাহিনীর পেশাগত দক্ষতার পূর্ণ আস্থা ব্য়ক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদকে কড়া জবাব দেওয়া আমাদের রাষ্ট্রীয় সংকল্প। এদিন জরুরি বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিবও। উপস্থিত ছিলেন BSF, NSG, অসম রাইফেলস, CRPF, SSB, CISF-এর শীর্ষ কর্তারা। এই তৎপরতার মধ্য়েই দেশবাসীর প্রশ্ন, পাকিস্তানকে কবে জবাব দেবে মোদি সরকার? কখন ? কীভাবে ?