নয়াদিল্লি: নিজের ঢাক নিজে কখনও পেটাননি। নীরবে নিজের কাজ করতে অভ্যস্ত ছিলেন। জীবন ছিল অত্যন্ত সাদামাটা। রাজনীতিতে এমন মানুষ সচরাচর চোখে পড়ে না। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের প্রয়াণে তাই শোকস্তব্ধ গোটা দেশ। আর সেই আবহেই তাঁকে নিয়ে অনেক অজানা কথা সামনে আসছে। তাঁর সরল, সাধারণ জীবনশৈলীর কথা তুলে ধরছেন কেউ, কেউ আবার তাঁর উদার মানসিকতার কথা তুলে ধরছেন। মনমোহনের প্রয়াণে মুখ খুললেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। (Manmohan Singh Demise)
মনমোহনের প্রয়াণের খবর পেয়ে তাঁকে শ্রদ্ধার্ঘ জানান আনোয়ার। তিনি বলেন, "সম্মানীয়, বন্ধুপ্রতিম ডঃ মনমোহন সিংহের প্রয়াণের খবরে মন ভারী হয়ে উঠেছে। মহান নেতাকে নিয়ে অজস্র লেখালেখি, বই নিশ্চয়ই রয়েছে, যেখানে ভারতের অর্থনৈতিক সংস্কারের স্থপতি হিসেবে উদযাপন করা হচ্ছে তাঁকে। অন্যতম বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে ভারতের উত্থানের নেপথ্যে ছিল প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনমোহন সিংহের অর্থনৈতিক জ্ঞান।" (Anwar Ibrahim)
নয়ের দশকে মালয়েশিয়ার অর্থমন্ত্রী ছিলেন আনোয়ার। নিজের চোখে মনমোহনের কাজ চাক্ষুষ করেছিলেন বলে জানিয়েছেন তিনি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বদ্ধপরিকর ছিলেন তাঁরা। এমনকি বেশ কিছু ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতাও বজায় রেখেছিলেন। আনোয়ারের বক্তব্য, "রাজনীতিক হিসেবে একটু বেমানান ছিলেন যদিও, কিন্তু রাষ্ট্রনেতা হিসেবে মনমোহন ছিলেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং অবিচল। নিজের বিরাট উত্তরাধিকার রেখে যাচ্ছেন তিনি, যা আগামী প্রজন্মকেও অনুপ্রাণিত করবে।"
মনমোহনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ব্যক্তিগত সম্পর্কের কিছু খুঁটিনাটিও তুলে ধরেন আনোয়ার। জানিয়েছেন, রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে তিনি যখন জেলে, সেই সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন মনমোহন। তাঁর ছেলেমেয়েদের শিক্ষার খরচ বহন করবেন বলে জানান। মালয়েশিয়ার তৎকালীন সরকারের রোষে পড়বেন জানতেন। কিন্তু তোয়াক্কা করেননি মনমোহন। আনোয়ার যদিও সাহায্য নিতে অস্বীকার করেন, কিন্তু এতেই মনমোহনের মানবিকতা, উদারতা বোঝা সম্ভব বলে মত তাঁর। শেক্সপিয়রের লেখার প্রসঙ্গ টেনে মনমোহনকে তিনি 'A man so full of the milk of human kindness' বলে উল্লেখ করেন।