কলকাতা: নন্দীগ্রাম দিবসে রাজ্য রাজনীতিতে ঘটে গেল বিরল ঘটনা। এদিন হুইলচেয়ারে বসে ৫ কিলোমিটার পদযাত্রা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজেই মিছিলে নেতৃত্বে দিয়ে যোগ দিলেন সভায়। হাজরায় পৌঁছে সভায় তিনি বলেন, আমি হুইলচেয়ারে ভাঙা পায়ে বাংলা ঘুরব, খেলা হবে। শারীরিক যন্ত্রণার থেকে মানসিক যন্ত্রণা অনেক বড়। সারা শরীরে আমার আঘাতের চিহ্ন। কিন্তু আমি কখনও তোয়াক্কা করিনি। স্বৈরাচারীদের হাত থেকে গণতন্ত্রকে রক্ষার দায়িত্ব অনেক বেশি। বাংলাকে ঘিরে চক্রান্ত নস্যাৎ হোক।
একইসঙ্গে তিনি বলেন, আজ ১৪ মার্চ নন্দীগ্রাম দিবস, কৃষক দিবস। ইতিমধ্যেই ৫-৬ দিন নষ্ট হয়েছে। জীবনে অনেক আঘাত-প্রত্যাঘাতের মধ্যে দিয়ে এগিয়েছি। কিন্তু কখনও মাথানত করিনি। আমার এখনও যন্ত্রণা আছে। কিন্তু মানুষের কাছে আমাকে যেতেই হবে। আমাকে চিকিৎসকরা ১৫ দিন বিশ্রাম নিতে বলেছিলেন। কিন্তু সেটা সম্ভব না। তাঁর কথায়, আমাকে আহত করার ঘটনা ঘটেছে। হাজরা আমার কাছে ঐতিহাসিক জায়গা, এখানে অনেকবার প্রাণে মারার চেষ্টা হয়েছে।
আজ গাঁধী মূর্তি থেকে হাজরা পর্যন্ত মিছিল করল যুব তৃণমূল। যার নেতৃত্বে ছিলেন খোদ তৃণমূল নেত্রী। নন্দীগ্রামে আহত হওয়ার পর প্রথম কর্মসূচি। দুপুরে কালীঘাটে গাড়িতে চড়ে ধর্মতলা পৌঁছন তিনি। সঙ্গে ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার সঙ্গে মিছিলে অংশগ্রহণ তৃণমূল প্রার্থীদের। মিছিল শেষে হাজরার সভায় হুইলচেয়ারে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলনেত্রী। মমতার পদযাত্রায় পুলিশের বেনজির নিরাপত্তা লক্ষ্য করা যায়। মিছিলের চারদিকে দড়ি দিয়ে ছিল ৫০ মিটার কর্ডন।
সভা শেষে এরপর কপ্টারে দুর্গাপুর যাওয়ার কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আগামীকাল পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ায় জোড়া সভা করবেন তৃণমূলনেত্রী। জানা গিয়েছে, সংশ্লিষ্ট জায়গায় যেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকবেন সেখানে ইতিমধ্যে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। নন্দীগ্রামে আহত হওয়ার পর এসএসকেএমে ভর্তি হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়। বাঁ পায়ে কোনও রকম নড়াচড়া না লাগে তা বলা হয় চিকিৎসকদের তরফে। ৭ দিন পর ফের চিকিৎসকরা দেখবেন। এর মধ্যেই এই কর্মসূচি।