কলকাতা: এ রাজ্যে ও ওড়িশার উপকূল এলাকা বিধ্বস্ত করে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। কিন্তু ইয়াস-পরবর্তী ঘটনাক্রম ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতোর এখনও অব্যাহত। গত শুক্রবার ইয়াসের ক্ষয়ক্ষতি আকাশপথে খতিয়ে দেখতে ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ সফরে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আকাশপথে পর্যবেক্ষণের পর পশ্চিম মেদিনীপুরের কলাইকুণ্ডায় ক্ষয়ক্ষতির পর্যালোচনা বৈঠক করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ওই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও থাকার কথা ছিল। কিন্তু ওই বৈঠকে না থেকে প্রধানমন্ত্রীর হাতে রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতির একটি রিপোর্ট তুলে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এই ঘটনা ঘিরে তীব্র রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। এরইমধ্যে রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে বদলির নির্দেশ ঘিরে রাজ্য ও কেন্দ্রের সংঘাতও দেখা দিয়েছে। এদিন আলাপনকে বদলির নির্দেশ প্রত্যাহারের অনুরোধ ও তাঁকে না ছাড়ার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। চিঠিতে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ২৪ মে রাজ্যের অনুরোধে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যসচিব হিসেবে এক্সটেনশন দেয় কেন্দ্র। ২৮ তারিখেই কেন দিল্লিতে বদলির নির্দেশ? এর সঙ্গে কলাইকুণ্ডার বৈঠকের সম্পর্ক নেই তো?
একইসঙ্গে চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একান্ত বৈঠক চেয়েছিলেন। কিন্তু বৈঠকে যে স্থানীয় বিধায়ক থাকবেন, তা তিনি জানতেন না। এক্ষেত্রে স্থানীয় বিধায়ক হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীর কথা বলেছেন বলেই মনে করা হচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেছেন, নিয়মমাফিক প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে একান্ত বৈঠক চাইলেও, দলের স্থানীয় বিধায়ক ও বৈঠকে ভূমিকা না থাকা রাজ্যপালকে আমন্ত্রণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে শনিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে রিভিউ মিটিংয়ে নাম না করেই শুভেন্দুর থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘ওই দিনআবহাওয়া খারাপ থাকায় প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে বেরিয়ে আসি। তাহলে আমার দোষ কোথায়? প্রধানমন্ত্রী সংসদে কেন বিরোধীদের বলতে দেন না। ২ সপ্তাহ আগে গুজরাতে কেন প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে বিরোধী নেতা ছিলেন না। অথচ ওড়িশার দুর্যোগ বৈঠকে কেন ছিলেন বিরোধী দলনেতা? ৩ বার প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে আমি দিঘায় যাই। গতকাল পরিকল্পনা করে কয়েকটা ফাঁকা চেয়ার রাখা হয়, যাতে আমি না বসি। যাঁরা বৈঠকে আসার কথা নয়, তাঁরা কেন ছিলেন?’
মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘আগে বলা হয়েছিল, শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক হবে। পরে দেখা গেল রাজ্যপাল, বিরোধী দলনেতা সবাই আছেন। দেখা গেল বিজেপির সবাই রয়েছে, আমি একা।আমি মুখ্যসচিবকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর হাতে ক্ষতির খতিয়ান তুলে দিই।’