মুম্বই: গো মাংস খাওয়ার অপবাদে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিককে হরিয়ানায় পিটিয়ে খুনের ঘটনা সামেন এসেছে একদিন আগেই। সেই আবহেই এবার চলন্ত ট্রেনে বৃদ্ধকে হেনস্থার ঘটনা সামনে এল মহারাষ্ট্র থেকে। গোমাংস নিয়ে যাচ্ছেন সন্দেহে ওই বৃদ্ধের উপর চড়াও হন একদল যুবক। এমনকি ওই বৃদ্ধকে এলোপাথাড়ি চড় কষাতেও দেখা যায় তাঁদের। বহু মানুষ ভিড় জমালেও, চোখের সামনে অন্যায় হতে দেখেও বাধা দিতে এগিয়ে আসেননি কেউ। বরং কেউ কেউ হামলাকারীদের সমর্থন করেন, দৃশ্য দেখে  হাসছিলেনও তাঁরা। (Man Abused on Beef Suspicion)


মহারাষ্ট্রের নাসিকের ইগতপুরি এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে। শনিবার ধুলে এক্সপ্রেসে চেপে মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন ওই বৃদ্ধি। সেই সময় সামনের আসনে বসা একদল যুবক তাঁর উপর চড়াও হন। সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ভিডিও সামনে এসেছে, তাতে দেখা গিয়েছে, সামনের আসনে বসা কিছু যুবক ওই বৃদ্ধকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছেন। ব্যাগ খুলিয়ে তাঁর জিনিসপত্র দেখতে চাইছেন। পা তুলে লাথিও মারতে উদ্যত হন এক যুবক। (Viral Video)


ভিডিওয় যে কথোপকথন ধরা পড়েছে, তাতে ওই বৃদ্ধকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করছেন অনেকে।  তাঁর কাছে গোমাংস রয়েছে বলে চারিদিক থেকে চিৎকার করেন সকলে মিলে। ওই বৃদ্ধ জানান, গোমাংস নয়, মেয়ের পছন্দের মাটন কৌটোয় ভরে নিয়ে যাচ্ছেন তিনি। কিন্তু তিনি কথা বলা মাত্রই একের পর এক চড়-থাপ্পড় এসে পড়ে গালে। অতর্কিতে হামলায় হতবাক হয়ে যান ওই বৃদ্ধ। গালে হাত চেপে বসে থাকেন। সেই সময় তাঁর মোবাইল ফোনটি কব্জা করতে উদ্যত হয় ভিড়। তাঁকে পুলিশে দেওয়া হবে বলে হুমকিও দেন কেউ কেউ। 



এর পর ওই বৃদ্ধকে পকেট থেকে ফোন বের করতে বাধ্য করা হয়। তিনি ফোন বের করলে, সামনের জন সেটি কেড়ে নিয়ে বন্ধ করে দেয়। বজরং দলকে ডেকে ওই বৃদ্ধকে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়। ট্রেনের কামরায় এই দৃশ্য দেখতে ভিড় হুমড়ি খেয়ে পড়ে। চোখের সামনে গোটা ঘটনা দেখে আমোদও পান অনেকে। কিন্তু ওই বৃদ্ধকে মারধর করতে দেখেও বাধা দেননি কেউ।


সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিওটি এলে AIMIM সাংসদ ইমতিয়াজ জরির সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেন। নিত্যদিন এই ধরনের ঘটনা ঘটে চললেও, সরকার চোখ বুজে রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।  জানা গিয়েছে, ওই বৃদ্ধ জলগাঁওয়ের বাসিন্দা। কল্যাণে মেয়ের বাড়ি যাচ্ছিলেন। সেই সময়ই মারধর করা হয় তাঁকে। বিষয়টি সামনে আসার পর GRP-র তরফে FIR দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি এখনও পর্যন্ত। কারও বিরুদ্ধে কোনও মামলা দায়ের হয়নি। ভিডিও দেখে কয়েক জনকে চিহ্নিত করা গেলেও, তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।