নয়াদিল্লি: নতুন করে ফের অশান্তির আগুন মণিপুরে। তাতে পুড়ে ছাই হয়ে গেল কমপক্ষে ১৫টি বাড়ি। গ্রেনেড হামলার ঘটনাও সামনে এসেছে। শুধু তাই নয়, শনিবার থেকে ছ'জনকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। ঘুমন্ত অবস্থায় প্রথমে কয়েক জনকে গুলি করে মারা হয় বলে অভিযোগ। তার পর তরোয়াল দিয়ে ফালা ফালা করে দেহগুলিকে কেটে ফেলা হয় বলেও সামনে এসেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আরও ৯০০ আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ান পাঠানো হয়েছে সেখানে। (Manipur Violence)
শনিবার মণিপুর লাঙ্গোল এলাকায় নতুন করে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। বিষয়টি সামনে এসেছে রবিবার। সেখানে পর পর কমপক্ষে ১৫টি বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কোয়াটকায় বাড়িতে ঢুকে তিন জনকে ঘুমন্ত অবস্থায় গুলি করে হত্যা করা হয় প্রথমে। তার পর তরোয়াল দিয়ে দেহগুলিকে ফালা ফালা করে কেটে ফেলা হয় বলে অভিযোগ। চূড়াচাঁদপুর থেকে দুষ্কৃতীরা এসে তাণ্ডব চালিয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। (Manipur News)
কোয়াটকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষও বাধে দুষ্কৃতীদের। দু'পক্ষের মধ্যে এলোপাথাড়ি গুলি চলে বলে জানা গিয়েছে। তাতে এক পুলিশকর্মী-সহ মোট তিন জন আহত হন। তার পরই মণিপুরে অতিরিক্ত বাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় দিল্লি। আধাসামরিক বাহিনী থেকে প্রায় ৯০০ জওয়ান পাঠানো হয়েছে। কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা এলাকা। থমথমে পরিস্থিতি এই মুহূর্তে।
মণিপুর পুলিশ জানিয়েছে, পার্বত্য এবং উপত্যকা এলাকায় নাকা-তল্লাশি চলছে। বিভিন্ন থানা থেকে প্রচুর পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র লুঠ হয়েছিল। তার মধ্যে কিছু উদ্ধার করা গিয়েছে। সব মিলিয়ে ১ হাজার ১৯৫ লুঠ হয়ে যাওয়া আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলে সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে। আরও অস্ত্রশস্ত্রের খোঁজ চলছে রাজ্য জুড়ে।
এর আগে, শুক্রবার মণিপুরের বিষ্ণুপুরে তিন জনকে গুলি করে হত্যার ঘটনা সামনে আসে। হামলাকারীদের এখনও পর্যন্ত শনাক্ত করা যায়নি। একের পর এই ধরনের নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদে ইম্ফলে মহিলারা রাস্তায় নেমে আসেন। টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান পুলিশ ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে। রাস্তা অবরোধ করে রাখা হয়। ইম্ফলের দু'টি জেলায় ভোর ৫টা থেকে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত কার্ফু জারি করা হয় প্রথমে।
সংরক্ষণ ঘিরে বিগত তিন মাস ধরে উত্তপ্ত মণিপুর। সবমিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ১৬০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে সেখানে। ঘরছাড়া প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। মূল বিবাদ মেইতেই এবং সংখ্যালঘু কুকিদের মধ্যে। মণিপুরের মোট জনসংখ্যার মধ্যে ৫৩ শতাংশ মেইতেই। জনজাতি সম্প্রদায় কুকি এবং নাগাদের জনসংখ্যা ৪০ শতাংশ। হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেইরা জনজাতি সংরক্ষণের দাবিতে সরব। তাতে সিলমোহর পড়ার পর থেকেই অশান্ত মণিপুর। সেখানকার 'আদি' বাসিন্দা কুকি, নাগাদের কোণঠাসা করার অভিযোগ উঠছে।