নয়াদিল্লি: দুই মাসেরও বেশি সময়ে ধরে জ্বলছে মণিপুর। জাতিগত হিংসায় ঝরেছে বহু প্রাণ। নষ্ট হয়েছে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি। মাস দুয়েক আগেরই একটি ঘটনার ভিডিও সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে। দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে হাঁটানো এবং পাশবিক অত্য়াচারের সেই ভিডিও ভাইরাল হতেই সারা দেশে তুমুল সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বাদল অধিবেশন শুরুর দিনেই ওই ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, দোষীদের কঠোর শাস্তির আশ্বাস দিয়েছেন। ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরেই ওই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।


মাস দুয়েক আগে ওই ঘটনার পরপরই পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়েছিল, যদিও ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরে প্রথম গ্রেফতার হয়। এবার সামনে এল আরও ভয়ানক একটি তথ্য। ওই দুই মহিলার উপর অত্যাচারের আগে অন্তত হাজারখানেক লোকের সশস্ত্র বাহিনী হামলা চালিয়েছিল কাংপোকপি জেলার একটি গ্রামের উপর। অসংখ্য ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল, পরপর বাড়িতে লুটতরজা চালানো হয়েছিল। হত্যা করা হয়েছিল একাধিক লোককে। এমনকী মহিলাদের উপরও অত্যাচার চালানো হয়েছিল। আর এই সবই অভিযোগ করা হয়েছিল পুলিশের কাছেও। ২১ জুন ওই ঘটনায় পুলিশের কাছে FIR দায়ের করা হয়েছিল। পিটিআই সূত্রের খবর, ওই FIR- তাদের হাতে এসেছে, সেই সূত্রেই দেখা যাচ্ছে, ওই দুই মহিলার উপর অত্যাচারের আগে এমনই তাণ্ডব চালিয়েছিল সশস্ত্র বাহিনী। ওই দুই মহিলার উপর অত্য়াচারের ভিডিও ভাইরাল হতেই এখন নড়েচড়ে বসেছে মণিপুর প্রশাসন। 


শুধু তাই নয়, PTI-সূত্রের খবর, ওই দুই মহিলার মধ্যে একজনের ভাই নিজের বোনকে উন্মত্ত জনতার হাত থেকে বাঁচাতে গিয়েছিল। অভিযোগ, সেই কারণে তাঁকে খুন করে উন্মত্ত জনতা।


পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মূল অভিযুক্ত ছাড়া আরও তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এখন ধৃতের সংখ্যা ৪। বৃহস্পতিবারই মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ, আশ্বাস দিয়েছিলেন যে ওই ঘটনার বিশদ তদন্ত করা হচ্ছে। সঙ্গে এও জানান, যে রাজ্যের তরফে অভিযুক্তদের জন্য ফাঁসির সাজার আর্জি জানানো হবে। শুধু তিনি নন। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, সংসদের বাদল অধিবেশন শুরুর আগে বিষয়টি নিয়ে কড়া বার্তা দেন। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিতে মণিপুরের মুখ্য়মন্ত্রীকে ফোন করেন কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। 


আরও পড়ুন: ক্ষিপ্ত জনতা আগুন ধরাল মূল অভিযুক্তের বাড়িতে, নারী নিগ্রহের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ মণিপুরে