ইম্ফল : দুই ছাত্র-ছাত্রীর হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে নতুন করে এমনিতেই উত্তপ্ত মণিপুর (Manipur)। এই আবহেই এবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের (N Biren Singh) ফাঁকা পৈতৃক বাড়িতে হামলা চালানোর চেষ্টা করল একদল জনতা। গতরাতে ইম্ফলের শেষ প্রান্তে অবস্থিত ওই বাড়িতে হামলার চেষ্টা করা হয়। যদিও বাতাসে গুলি চালিয়ে উত্তেজিত জনতাকে ফিরিয়ে দিতে সক্ষম হয় নিরাপত্তাবাহিনী। পরে মণিপুর পুলিশের তরফে x (সাবেক ট্যুইটার) হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়, মুখ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত বাড়িতে "জনতার হামলার খবর মিথ্যা এবং অপপ্রচারমূলক।"


ইম্ফলের মাঝখালে আলাদা এবং সুরক্ষিত একটি বাড়িতে থাকেন মুখ্যমন্ত্রী। সংবাদ সংস্থা PTI-কে এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, "ইম্ফলে হেনগ্যাঙ্গ এলাকায় মুখ্যমন্ত্রীর পৈতৃক বাড়িতে হামলার একটা চেষ্টা চালানো হয়েছিল। কিন্তু, বাড়ির ১০০ থেকে ১৫০ মিটার আগেই জনতাকে থামিয়ে দেয় নিরাপত্তাবাহিনী।"


ওই বাড়িতে কেউ-ই থাকেন না। যদিও সেখানে নাগাড়ে পাহারা দেওয়া হয় বলে জানান ওই আধিকারিক। তিনি বলেন, "দুই দলে ভাগ হয়ে পৃথক দিক থেকে জনতা এসে মুখ্যমন্ত্রীর পৈতৃক বাড়ির সামনে জড়ো হয়। কিন্তু, তাদের থামিয়ে দেয় নিরাপত্তা বাহিনী।" বিক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে একাধিকবার টিয়ার গ্যাসের শেল ফাটায় Rapid Action Force ও রাজ্য পুলিশের কর্মীরা। দৃশ্যমানতা কমাতে এবং প্রতিবাদীরা যাতে আরও অগ্রসর হতে না পারে, সেই লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষের তরফে সমগ্র এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। এই পরিস্থিতিতে সামনের রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখায় বিক্ষুব্ধরা। চলে আসে অ্যাম্বুলেন্সও। যদিও আহতের কোনও খবর নেই।


দুই ছাত্র-ছাত্রীর "অপহরণ ও হত্যার" ঘটনায় নতুন করে উত্তপ্ত মণিপুর (Manipur)। সাম্প্রদায়িক হিংসা (Ethnic Violence) ছড়িয়ে পড়লে গত ৬ জুলাই থেকে নিখোঁজ ছিল এই দুই জন। সশস্ত্র আততায়ীরা তাদের হত্যা করেছে বলে সন্দেহ পরিবারের। মাস দু'য়েক আগে এই দুই ছাত্র-ছাত্রী নিখোঁজ হলেও, সম্প্রতি সোশাল মিডিয়ায় (Social Media) তাদের মৃতদেহের ছবি ছড়িয়ে পড়ে। যাকে কেন্দ্র করে নতুন করে উত্তপ্ত উত্তর-পূর্বের এই রাজ্য। 


এই দুই জনের হত্যার অভিযোগকে কেন্দ্র করে দিন দু'য়েক আগে ইম্ফল-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্র-ছাত্রীদের বিক্ষোভে নতুন করে অচলাবস্থা তৈরি হয় রাজ্যজুড়ে। এই পরিস্থিতিতে আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতির যাতে আর অবনতি না হয়, সেই লক্ষ্যে ইম্ফল পূর্ব ও ইম্ফল পশ্চিম জেলায় পূর্ণাঙ্গ কার্ফু জারি করে মণিপুর সরকার। ঘটনার বীভৎসতা আঁচ করে তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেয় মণিপুর সরকার। এর পাশাপাশি আততায়ীদের ধরতে শুরু হয় তল্লাশি অভিযান। এদিকে দায়িত্ব পেয়েই ইম্ফল পৌঁছে যায় বিশেষ অধিকর্তা অজয় ভাটনগর-সহ সিবিআইয়ের একটি দল।