ইম্ফল : জাতিগত হিংসায় বিধ্বস্ত মণিপুরে (Manipur Violence) পুলিশের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে সাড়ে ৬ হাজারের বেশি। গত ৩ মে থেকে এই রাজ্যে কুকি-জো-চিন ও মেইতি সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে এই পরিংসংখ্যান। পুলিশি এই ডেটা সোমবার জমা পড়েছে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) । এদিকে প্রায় তিন মাস ধরে হিংসার ঘটনা লেগেই রয়েছে মণিপুরে।


মে ৩ থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত যে পরিসংখ্যান সামনে এসেছে, সেই অনুযায়ী, ৬ হাজার ৫২৩টি এফআইআর দায়ের হয়েছে। যার অধিকাংশই 'জিরো এফআইআর।' প্রসঙ্গত, 'জিরো এফআইআর' (Zero FIR) যে কোনও থানায় দায়ের করা যায়। যে থানা এলাকায় সংশ্লিষ্ট ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানেই করতে হবে এমন কোনও মানে নেই। এই ধরনের এফআইআরে কোনও সংখ্যা দেওয়া হয় না। তাই 'জিরো এফআইআর' বলা হয় বিষয়টিকে। এবং যেখানে মামলা দায়ের করা হচ্ছে, সেখান থেকে নির্দিষ্ট থানায় তা পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরে যার তদন্ত শুরু হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, একই মামলায় এরকম একাধিক জিরো এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। মণিপুর জুড়ে যেহেতু মে, জুন ও জুলাই মাসে এরকম প্রচুর জিরো এফআইআর হয়েছে, তাই পুলিশের কাছে এজাতীয় মামলার সংখ্যা ১৪ হাজার ছাপিয়ে গেছে। এমনই তথ্য জমা পড়েছে শীর্ষ আদালতে।


মণিপুরে চলতে থাকা জাতিগত হিংসা নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিতে সোমবার সুপ্রিম কোর্টে উপস্থিত ছিলেন সেরাজ্যের পুলিশ প্রধান রাজীব সিং। তাছাড়া হিংসার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তাও জানান তিনি।


পুলিশ রিপোর্টে ৬ হাজার ৫২৩টি এফআইআরের মধ্যে রয়েছে- 'খুন এবং/অথবা ধর্ষণ এবং শ্লীলতাহানি, লুঠ এবং সম্পত্তি নষ্ট, ধর্মীয়স্থানে হামলা এবং গুরুতর আঘাত।' পুলিশ রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, একটি ধর্ষণের এবং খুনের মামলা, তিনটি ধর্ষণ/গণধর্ষণের মামলা, ৭২টি খুনের মামলা এবং চারটি শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তবে, পুলিশের কাছে সবথেকে বেশি মামলা দায়ের হয়েছে, অগ্নিসংযোগ, লুঠ ও সম্পত্তি নষ্টের। এছাড়া ধর্মীয়স্থানে হামলার ঘটনার ৪৬টি এফআইআর হয়েছে। 


ধীরে ধীরে মণিপুর শান্তি ফিরছে বলে দাবি করা হচ্ছে। যদিও প্রায় প্রতিদিনই হিংসার ঘটনা সামনে আসছে। উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে ৪০ হাজারের বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ৩ মে থেকে শুরু হওয়া মণিপুর অশান্তিতে ইতিমধ্যে ১৭০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়েছে।