নয়াদিল্লি: মাথার দাম রাখা হয়েছিল ১ কোটি টাকা। সেই মাওবাদীর মৃত্যু হল ছত্তীসগঢ়ে। সেনার অভিযানে মারা গিয়েছেন ওই মাওবাদী। সবমিলিয়ে মোট ১৪ জন মাওবাদীর মৃত্যু হয়েছে সেনার এনকাউন্টারে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সেনার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। ‘নকশালমুক্ত ভারত’ গড়ার পথে সেনা বড় সাফল্য পেল বলে মন্তব্য় করেছেন শাহ। (Maloist Encounter)
ওড়িশা এবং ছত্তীসগঢ় পুলিশের সঙ্গে সোমবার রাতে দুই রাজ্যের সীমানাবর্তী এলাকায় যৌথ আভিযানে নামে নিরাপত্তা বাহিনী। মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত মাওবাদীদের সঙ্গে গুলি বিনিময় চলে তাদের। সেই অভিযানেই মোট ১৪ জন মাওবাদী মারা গিয়েছেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন শীর্ষস্থানীয় নকশাল কমান্ডার জয়রাম ওরফে চলপতি, যাঁর মাথার দাম রাখা হয়েছিল ১ কোটি টাকা। জয়রাম নকশাল সেন্ট্রাল কমিটির সদস্য ছিলেন। (Chhattisgarh Maoist Encounter)
ওড়িশা ও ছত্তীসগঢ় পুলিশ ছাড়াও এই যৌথ অভিযানে শামিল ছিল ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ড (DRG), সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স (CRPF), ছত্তীসগঢ়ের CoBRA বাহিনী এবং ওড়িশার স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ। গরিয়াবন্দের কুলারিঘাট রিজার্ভ ফরেস্টে মাওবাদীরা লুকিয়ে রয়েছেন বলে খবর মিলেছিল গোপন সূত্রে। সেই মতো হানা দেয় যৌথ বাহিনী। মাওবাদীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র, বিস্ফোরক, রাইফেল এবং অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এখনও এলাকায় চিরুণিতল্লাশি চলছে।
অভিযানের পর এদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় নিরাপত্তাবাহিনীর ভূয়সী প্রশংসা করেন শাহ। তিনি লেখেন, ‘আরও একবার জোর ধাক্কা খেল নকশালবাদ। নকশালমুক্ত ভারত গড়ার পথে বড় সাফল্য পেল আমাদের নিরাপত্তাবাহিনী। CRPF, SoG ওড়িশা, ছত্তীসগঢ় পুলিশ মিলে যৌথ অভিযানে ১৪ জন মাওবাদীকে নিকেশ করেছে। নকশালমুক্ত ভারত গড়ার পথে আমাদের নিরাপত্তাবাহিনী যৌথ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এর ফলে নকশালবাদ আজ মৃত্যুশয্যায় শায়িত’। ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণুদেও সাই-ও নিরাপত্তাবাহিনীর প্রশংসা করেছেন। বিজেপি-র ডাবল ইঞ্জিন সরকার ২০২৬ সালের মার্চ মাসের মধ্যে ছত্তীসগঢ়কে নকশালমুক্ত করে তুলবে বলে ঘোষণা করেছেন।
চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত ছত্তীসগঢ়ে সবমিলিয়ে ৪০ জন মাওবাদীর মৃত্যু হয়েছে। ২০২৪ সালে সেখানে প্রায় ২০০ মাওবাদীকে নিকেশ করে নিরাপত্তাবাহিনী। যে ২১৯ জনকে নিকেশ করা হয়, তাঁদের মধ্যে ২১৭ জনই ছিলেন বাস্তার অঞ্চলের বাসিন্দা। বাস্তার, দান্তেওয়াড়া, কাঙ্কের, বিজাপুর, নারায়ণপুর, কোন্ডাওগাঁও এবং সুকমা ওই অঞ্চলের মধ্যে পড়ে। গ্রেফতার হয়েছেন ৮০০-র বেশি মাওবাদী অস্ত্রত্যাগ করেছেন ৮০২ জন। ২০২৪ সালে মাওবাদী অভিযানে গিয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর ১৮ জন প্রাণ হারান। হিংসার ঘটনায় প্রাণ হারান ৬৫ জন সাধারণ মানুষ।