মেরঠ: প্রেমিকের সঙ্গে মিলে একদা মার্চেন্ট নেভিতে কর্মরত স্বামীকে খুন। মেরঠের ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা দেশে। সেই মুস্কান রাস্তোগি ফের খবরের শিরোনামে। জেলের অন্দরে পরীক্ষা করে দেখা গেল, সে অন্তঃসত্ত্বা। মুসকান প্রেমিক সাহিল শুক্লর সন্তানের মা হতে চলেছে বলে জানা গিয়েছে। মুসকান অন্তঃসত্ত্বা বলে মেনে নিয়েছেন জেল কর্তৃপক্ষ। বলা হয়েছে, নিয়মিত যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয় বন্দিদের, তাতেই মুসকান অন্তঃসত্ত্বা বলে ধরা পড়েছে। (Muskan Rastogi)
একদা মার্চেন্ট নেভিতে কর্মরত স্বামী সৌরভ রাজপুত (২৯)-কে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে ২৭ বছর বয়সি মুসকান এবং তার ২৫ বছর বয়সি প্রেমিক সাহিল। অপরাধ স্বীকার করেছে তারা দু'জনই। এই মুহূর্তে উত্তরপ্রদেশের মেরঠের চৌধরি চরণ সিংহ জেলে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছে তারা। জেলার চিফ মেডিক্যাল অফিসার অশোক কাটারিয়াও মুসকানের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবরে সিলমোহর দিয়েছেন। (Meerut Case)
জানা গিয়েছে, প্রাথমিক পরীক্ষায় মুসকান বলেই ধরা পড়েছে। এবার আলট্রাসাউন্ড পরীক্ষা হবে। তাহলেই মুসকান কত মাসের অন্তঃসত্ত্বা, কী অবস্থা ভ্রূণের, তা বোঝা সম্ভব হবে। এই মুহূর্তে জেলে সেলাইয়ের কাজ করছে মুসকান। সাহিল চাষবাসের কাজ পেয়েছে। পাশাপাশি, তাদের কাউন্সেলিংও চলছে। মাদকাসক্তি থেকে মুক্ত করার চেষ্টাও চলছে জেলের অন্দরে।
২০১৬ সালে ভালবেসেই সৌরভকে বিয়ে করেন মুসকান। মুসকানকে সময় দিতে সম্প্রতি মার্চেন্ট নেভির চিকরিও ছেড়ে দেন সৌরভ। তাঁর সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে অশান্তি শুরু হয় পরিবারে। এতে একমাত্র মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে ২০১৯ সালে ভাড়াবাড়িতে উঠে যান সৌরভ। পরে লন্ডনের একটি বেকারিতে চাকরি নেন। গত তিন বছর ধরে সেখানেই ছিলেন। কিন্তু সংসারে সুখ টেকেনি বেশিদিন। মুসকানের সঙ্গে সাহিলের সম্পর্কের কথা জেনে যান সৌরভ। সম্প্রতি মেয়ের জন্মদিনে বাড়িছিলেন। আর তাতেই খুন হতে হয় তাঁকে।
জানা যায়, গত ৪ মার্চ খাবারে ওষুধ মিশিয়ে সৌরভকে প্রথমে অজ্ঞান করে দেয় মুসকান। এর পর সাহিলকে ফোন করে ডেকে আনে। দু'জনে মিলে সৌরভকে ছুরি দিয়ে কোপায়। বুক ফালাফালা করে দেওয়া হয়, কেটে দেওয়া হয় গলার নলি। এর পর দেহ টুকরো টুকরো করে প্লাস্টিকের ড্রামে ঢোকায় তারা। তার সিমেন্ট ঢেলে লিল করে দেয়। সৌরভ পাহাড়ে গিয়েছে বলে এর পর বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ে মুসকান। সাহিলের সঙ্গে মানালি বেড়াতে চলে যায়। সৌরভের ফোন থেকে পাহাড়ের ছবিও পোস্ট করে, যাতে সন্দেহ না জাগে কারও মনে। কিন্তু বেশ কিছু দিন পরও ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না যখন, সন্দেহ হয় সৌরভের পরিবারের। সেই মতো ছেলে নিখোঁজ বলে থানায় অভিযোগ দায়ের করে তারা। তদন্তে নেমে মুসকান এবং সাহিলকে আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তারা অপরাধ স্বীকার করে বলে জানা যায়।
মুসকানের বাবা প্রমোদ রাস্তোগি জানিয়েছেন, সাহিলের পাল্লায় পড়ে মাদক নিতে শুরু করে তাঁর মেয়ে। মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে মুসকান। মাদক ছাড়া থাকতে পারবে না বলে বাবাকেও জানায় মুসকান। মেয়ের কড়া শাস্তির দাবি তুলেছেন প্রমোদ।