জয়পুর: অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা মানবদেহে কোভিড-১৯-এর প্রতিষেধক পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করে দেখার জন্য যখন লোক খুঁজছিলেন তখন নিজেকে এগিয়ে দেওয়ার ঝুঁকির ব্যাপারে একবারও ভাবেননি দীপক পালিওয়াল। তাঁর আদি বাড়ি রাজস্থানের জয়পুরে, বর্তমানে লন্ডন শহরে স্ত্রী সন্তান নিয়ে বাস করেন ৪২ বছরের এই ব্যক্তি। সারা বিশ্ব যখন করোনা ভাইরাসের সঙ্গে লড়ছে, তখন মানুষেরই স্বার্থে প্রতিষেধক পরীক্ষাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এগিয়ে গেলেন একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক।

কেমন করে নিয়েছিলেন সিদ্ধান্তটা? সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে পালিওয়াল জানিয়েছেন অতিমারী আটকাতে মানব জাতি যে ভয়ানক লড়াইয়ের সম্মুখীন হয়েছে তাতে তিনি নিজেকে সৈনিক হিসেবে নিয়োগ করতে চেয়েছিলেন। শেষটায় যখন মানবদেহে পরীক্ষার জন্য ইচ্ছুকদের নাম তালিকাভুক্ত করার ডাক এলো, তিনি আর একবারও না ভেবে নিজের নামটা তাতে যুক্ত করেন। ভাবেন, এ লড়াইয়ে তাঁর মগজ যখন কোনও কাজে আসছে না অন্তত শরীরটা কাজে আসুক। নিজের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে শুধু স্ত্রী এবং কয়েকজন ঘনিষ্ঠ বন্ধুকেই জানিয়েছিলেন পালিওয়াল। প্রথমে স্ত্রী রাজি হননি। তবুও তাঁকে টলানো যায়নি।

পালিওয়াল জানিয়েছেন, ট্রায়ালের ব্যাপারে তিনি ১৬ এপ্রিল প্রথম জানতে পারেন। ক্রমে তিনি লন্ডনের পাঁচটি চিকিৎসাকেন্দ্রে ঘুরে নিজের প্রাথমিক পরীক্ষাগুলো করিয়ে নেন। স্ক্রিনিং হয় ২৬ এপ্রিল।

দেহে প্রয়োগের আগে তাঁকে জানানো হয়েছিল যে এর প্রভাবে শরীরের কোনও কোনও অঙ্গ প্রত্যঙ্গ অকেজো হয়ে যেতে পারে, এমনকী মৃত্যুও অসম্ভব নয়। তবু তিনি সঙ্কল্পে অটুট থেকেছেন।

অক্সফোর্ডে গবেষণার কাজ এখনও চলছে। দীপকের অনুপ্রেরণায় হিউম্যান ট্রায়াল হিসেবে নিজেকে এগিয়ে দিতে প্রস্তুত হচ্ছেন আরও অনেকে।