ক্রমেই ফিকে হয়ে আসছে আশার আলো। মেঘালয়ে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া নবদম্পতির মধ্যে উদ্ধার হয়েছে তরতাজা যুবক রাজার দেহ। তার সঙ্গে তাঁকে খুন করার কাজে ব্যবহৃত সম্ভাব্য-অস্ত্র ও মোবাইল ফোনটি। তার থেকে পাওয়া গিয়েছে নানারকম তথ্য। এছাড়া মেঘালয়ের বিভিন্ন জায়গায়, যেখানে ওই দম্পতি গিয়েছিলেন, সেইসব জায়গার সিসিটিভি ফুটেজও দেখা হয়েছে খতিয়ে। তাতে রহস্য বাড়ছে। এখনও হারিয়ে যাওয়া নববধূ সোনমের সন্ধান মেলেনি। স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে এখন এনডিআরএফের একটি দলও তাঁর সন্ধান করছে।
২ জুন রাজা রঘুবংশীর ক্ষত-বিক্ষত দেহ একটি খাদ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে, কিন্তু তাঁর স্ত্রী সোনমের বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও খবর পাওয়া যায়নি। স্থানীয় পুলিশ কর্মী ও ট্যুরিস্ট গাইডদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনা সম্পর্কে জানার চেষ্টা চলছে। ইনদৌরের ওই নববিবাহিত দম্পতি ২৩ মে নিখোঁজ হওয়ার আগে কী কী করেছিলেন, তার একটা ছবিও পাওয়া গিয়েছে। তদন্তকারীরা সেই বিষয়ে অনেক তথ্য পেয়েছেন। পুলিশ এই বিষয়ে বেশ কিছুজনের বয়ানও নথিভুক্ত করেছে। অন্যদিকে, সোনমের পরিবারের ধারণা, তাঁকে অপহরণই করা হয়েছে,এখনও আশায় বুক বাঁধছেন মেয়েকে ফিরে পাবেন একদিন-না-একদিন।
নিখোঁজ হওয়ার আগে এই দম্পতি কী কী করেছিলেন
মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা ওই দম্পতি ২৩ মে থেকে নিখোঁজ হয়ে যান। যদিও, দম্পতি নিখোঁজ হওয়ার ১২ ঘণ্টা আগে পর্যন্ত কী কী করেছিলেন, সেই বিষয়ে একটা ছবি পাওয়া গিয়েছে ট্যুরিস্ট গাইড ভাকুপর বনশাইয়ের কাছ থেকে। গাইড জানিয়েছেন, ওই দম্পতি ২১ মে শিলং পৌঁছেছিলেন। এর পরের দিন, ২২ মে তাঁরা ইস্ট খাসি হিলসে পৌঁছান এবং তাঁদের ভাড়া করা স্কুটি পার্কিংয়ে রাখেন ও নোনগ্রিয়াট গ্রামে ট্রেকিং করার জন্য একজন গাইডকে ভাড়া করেন।
এনডিটিভির রিপোর্ট অনুযায়ী, গাইড ভাকুপর বনশাই বলেছেন, "আমি মাওলাখিয়াত থেকে নোনগ্রিয়াট পর্যন্ত ট্রেকিংয়ে তাঁদের নিয়ে গিয়েছিলাম, এতে প্রায় তিন ঘণ্টা সময় লেগেছিল। এরপর আমি তাঁদের শিপারা হোমস্টেতে ফিরিয়ে দিয়ে আসি। এরপর তাঁরা অ্যালবার্ট পাডে নামের অন্য একজন গাইডকে সঙ্গে নেন।" গাইড আরও বলেন, "আমরা পরের দিনও তাঁদের গাইড লাগবে কি না জিগ্যেস করেছিলাম, কিন্তু তাঁরা রাজি হননি এবং বলেছিলেন, ওই রাস্তা তাঁদের চেনাই আছে। "
অন্যদিকে, শিপারা হোমস্টের চালান যে মহিলা, তিনি জানিয়েছেন, ওই দম্পতি বিকেল সাড়ে পাঁচটায় হোমস্টেতে পৌঁছেছিলেন। এরপর তাঁরা সমস্ত পেমেন্ট মিটিয়ে দেন। পরের দিন (২৩শে মে) সকাল সাড়ে পাঁচটায় ওঠেন এবং জানান যে তাঁদের তাড়াতাড়ি চেক আউট করতে হবে এবং সকাল ৬টা নাগাদ হোমস্টে থেকে বেরিয়ে যান।
দম্পতিকে শেষবার দেখে ছিলেন এক ট্যুরিস্ট গাইড । অ্যালবার্ট পাডে তাঁদের দেখা যায় এদিন। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, সেদিন সকাল ১০টা নাগাদ তিনি ওই দম্পতিকে মাওলাখিয়াত গ্রামের দিকে যেতে দেখেন এবং তাঁদের সঙ্গে আরও তিনজন পুরুষ ছিলেন। এরপর থেকেই তাঁরা দু'জন নিখোঁজ।