নয়াদিল্লি: সংখ্যালঘু নিপীড়নের অভিযোগে আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনার শিকার বাংলাদেশ। পাল্টা ভারতের দিকে আঙুল তুলেছে পড়শি দেশের সরকার। সেই আবহে এবার জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, PDP নেত্রী মেহবুবা মুফতি বিতর্ক বাড়ালেন। উত্তরপ্রদেশের সম্ভলের উদাহরণ টানলেন তিনি। মেহবুবার প্রশ্ন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ফারাক কোথায়? (Mehbooba Mufti)


আদালতের নির্দেশে উত্তরপ্রদেশের সম্ভলে শাহি জামা মসজিদের সমীক্ষা ঘিরে সম্প্রতি উত্তেজনা ছড়ায়। সংঘর্ষে প্রাণ যায় চার জনের, আহত হন বহু। সেই প্রসঙ্গই তুলে ধরেছেন মেহবুবা। তাঁর কথায়, "আমি আতঙ্কিত। মনে হচ্ছে, ১৯৪৭ সালের পরিস্থিতিতে ফিরে যাচ্ছি আমরা। তরুণরা চাকরি হয় না, ভাল হাসপাতাল, শিক্ষা ব্যবস্থা নেই। রাস্তার অবস্থারও উন্নতি হয়নি। কিন্তু মন্দিরের সন্ধানে মসজিদ ভাঙার প্রচেষ্টা চলছে। সম্ভলের ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। দোকানে কাজ করছিলেন যাঁরা, তাঁদের গুলি করা হয়।" (Jammu And Kashmir)


উপত্যকায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এমন মন্তব্য করেন মেহবুবা। এ প্রসঙ্গে রাজস্থানের অজমেরের সুফি মইনউদ্দিন চিস্তি দরগাকে ঘিরে বিতর্কও টানেন। তিনি বলেন, "অজমের শরিফ দরগায় সব ধর্মের মানুষ যান। ওই দরগা সৌভ্রাতৃত্বের প্রতীক। দরগার নীচেও মন্দিরের সন্ধানে খোঁড়াখুঁড়ি করতে চাইছে।" অজমের শরিফ দরগার নীচে শিবমন্দির থাকতে পারে বলে সম্প্রতি আদালেত আবেদন জমা পড়ে। সেখানে পুজো করতে চেয়ে আর্জি জানানো হয়। আদালত সেই নিয়ে নোটিস দিয়েছে আর্জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া-কে। 


এর পরই ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে তুলনা টানেন মেহবুবা। তাঁর বক্তব্য, "বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর অত্যাচার চলছে। ভারতেও যদি সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার হয়, সেক্ষেত্রে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পার্থক্য কোথায়? আমি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে কোনও পার্থক্য খুঁজে পাই না। আমাদের এত মহান দেশ, পৃথিবীর সর্বত্র ধর্মনিরপেক্ষতার জন্য পরিচিত।" বাংলাদেশের ঘটনায় দিল্লির তরফে যখন ঢাকার তীব্র নিন্দা করা হয়েছে, সেখানে সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে, সেই সময় মেহবুবার এই মন্তব্যে বিতর্ক শুরু হয়েছে। 


উপত্যকায় বিজেপি-র প্রাক্তন সভাপতি রবীন্দ্র রায়না বলেন, "মেহবুবা ভারত ও বাংলাদেশের যে তুলনা টেনেছেন, তা ঠিক নয়। বাংলাদেশে কী ভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়ে চলেছে, সেখানে যেভাবে লাগাতার সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিন্দা করা হচ্ছে, মহিলাদের অপমান করা হচ্ছে, দেশের প্রধানমন্ত্রীকে পালাতে হয়েছে, তা গোটা পৃথিবী জানে।  মেহবুবা যে মন্তব্য করেছেন, তা দেশবিরোধী। জম্মু ও কাশ্মীর সরকারের উচিত বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা।" জম্মু ও কাশ্মীর সরকারকে মেহবুবার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে আর্জি জানিয়েছেন তিনি।