নয়াদিল্লি: দেশের উত্তর-পূর্ব প্রান্ত জ্বলছে গত কয়েক মাস ধরে। এবার অশান্তি দেখা দিল উত্তর-পশ্চিমেও। গত কাল, সোমবার, ধর্মীয় শোভাযাত্রায় পাথর ছোড়ার ঘটনার পর এদিন সকালেও নতুন করে তপ্ত হয়ে ওঠে হরিয়ানার (Haryana Violence) গুরুগ্রাম (Gurugram)। মোটরবাইক ও এসইউভি-তে সওয়ার অন্তত দু'শো জন মিলে গুরুগ্রামের বাদশাহপুর এলাকার একাধিক বিরিয়ানির দোকান ও অন্যান্য খাবার স্টল ভাঙচুর করে। প্রশাসন সূত্রে খবর, মোট ১৪টি দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে। যদিও গুরুগ্রামের ডেপুটি কমিশনার নিশান্ত যাদব জানান, ভোরের দিকে গুরুগ্রামের সেক্টর ৫৭ এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন তিনি। তখন তা শান্তই ছিল।


আর যা...
পরে নিশান্ত যাদব আরও বলেন, 'গুরুগ্রামের বাসিন্দাদের উদ্দেশে অনুরোধ, নিতান্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বেরোবেন না। গুজবে কান দেবেন না।' এই অশান্তির সূত্রপাত নুহ জেলায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের জানাচ্ছেন, ‘ব্রিজ মণ্ডল জলাভিষেক যাত্রা’ নামে এক ধর্মীয় শোভাযাত্রা চলছিল খেডলা মোড এলাকায় । পুলিশ সূত্রের খবর,  সেই সময় ওই শোভাযাত্রায় ইট-পাথর ছোড়া শুরু হয়। তার পর থেকেই অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় অরাজকতা। ভয়ঙ্কর চেহারা নেয় সংঘর্ষ। প্রাণ বাঁচাতে বহু মানুষ গুরুগ্রামের মন্দিরে আশ্রয় নেন। প্রাথমিক ভাবে জানা যায়,  দুই হোম গার্ডের প্রাণ গিয়েছে। তাঁদের নাম - নীরজ এবং গুরুসেবক। এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে মৃতের সংখ্যা ৫। জখম অন্তত ৫০ জন যাঁদের মধ্যে  একাধিক পুলিশকর্মীও রয়েছেন বলে খবর। দেখতে দেখতে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে অশান্তি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নুহ, গুরুগ্রাম, ফরিদাবাদ, পালওয়াল এবং রেওয়ারি জেলায় জমায়েত নিষিদ্ধ করতে নির্দেশ জারি করা হয়েছে। আগামীকাল পর্যন্ত, নুহ এবং ফরিদাবাদে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা সাসপেন্ড করা হয়েছে। সোহনা, পাতৌদি এবং মানেসরেও পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।  


প্রতিক্রিয়া...
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল হরিয়ানার এমন ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ট্যুইটারে তিনি লেখেন, 'হরিয়ানার নুহ-তে এই গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। উত্তর-পূর্বে মণিপুরের পর এবার হরিয়ানায় এমন ঘটনা মোটেও ভাল সঙ্কেত নয়।' তবে মনোহরলাল খট্টর প্রশাসনের তরফে যে দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে, সেটা স্পষ্ট। পুলিশ জানিয়েছে, এলাকায় উত্তেজনা কমাতে সোহনা-তে দুই গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের নিয়েই শান্তি কমিটি তৈরি করা হবে। এদের কাজ, সমাজবিরোধীদের চিহ্নিত করা। পাশাপাশি, এমন বিষয় যা দুই গোষ্ঠীর কাছেই গুরুত্বপূর্ণ তা নিয়ে আলোচনা চালানো। আপাতত পরিস্থিতি সার্বিক ভাবে নিয়ন্ত্রণে এলেও গত কালকের স্মৃতি ভোলার নয়। যে ভাবে একের পর এক গাড়িতে আগুন লাগিয়ে, এলাকায় পাথর বৃষ্টি করে হরিয়ানার একাংশে রণক্ষেত্রের ছবি তৈরি করা হয়েছিল, তাতে আতঙ্কের চোরাস্রোত এখনও স্পষ্ট স্থানীয়দের মধ্যে। 


আরও পড়ুন:'বাংলায় ৬ লক্ষ পদ লোপ,২ কোটি বেকারের আর্তনাদ শোনা যাচ্ছে', রাজ্যকে নিশানা শুভেন্দুর