কলকাতা : ফুসফুসের ক্যান্সার ( Lung cancer )। ক্রমেই থাবা চওড়া হচ্ছে কর্কট রোগের। সেই সঙ্গে বাড়ছে ফুসফুসে ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যাও। অন্যান্য ক্যান্সারের মতোই এ ক্ষত্রেও দেরিতে ধরা পড়া মানে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাওয়া। চিকিৎসক অর্পণ চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, ফুসফুসের ক্যান্সারের প্রধান সমস্যাই হল প্রাথমিক স্তরে লক্ষণ দেখা না দেওয়া। ১ অগাস্ট বিশ্ব ফুসফুস ক্যান্সার দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এদিন এবিপি লাইভের সঙ্গে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ভাগ করে নিলেন চিকিৎসক অর্পণ চক্রবর্তী ( Dr Arpan Chakraborty )।
চিকিৎসক জানালেন শুধুমাত্র ধূমপানই ফুসফুসের ক্যান্সারের একমাত্র কারণ নয়। প্যাসিভ স্মোকাররাও একইরকমভাবে ক্যান্সারের থাবায় পড়তে পারেন। এছাড়াও আর্সেনিক বা অ্যাজবেসটাস এক্সপোজারও ( Arsenic, Asbestos exposure) ফুসফুসের ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। এছাড়াও কারও কারও ক্ষেত্রে জিনগত কারণেও ফুসফুসের ক্যান্সার হয়। তবে এ কথা অনস্বীকার্য ধূমপানের জন্য ফুসফুসের ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা সবথেকে বেশি। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ, শুধু নিজে ধূমপান ছাড়া নয়, ধূমপায়ীদের থেকে দূরে থাকা অর্থাৎ সিগারেটের ধোঁয়া থেকে দূরে থাকার বিষয়টিও জরুরি। দেখা গিয়েছে, যারা ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত, তারা বেশিরভাগই ধূমপায়ী। প্যাসিভ স্মোকিং, যা সেকেন্ডহ্যান্ড স্মোকাররাও অনেকে ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারেন।
গবেষণায় এমনও দেখা গিয়েছে যে, গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে যারা সেকেন্ডহ্যান্ড ধূমপানের সংস্পর্শে আসে, তাদের গর্ভস্থ শিশুর স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। এছাড়াও আরও নানারকম স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ঝুঁকি দেখা যেতে পারে। জন্মের সময় কম ওজনের মতো সমস্যা চোখে পড়ে।
চিকিৎসক অর্পণ চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, কয়েকটি লক্ষণের দিকে নজর রাখতে হবে। যেমন -
- অনেকদিন ধরে চলতে থাকা খুসখুসে কাশি
- শ্বাস নিতে অসুবিধা
- কাশির সঙ্গে রক্ত পড়া
- বুকে ব্যথা
- ক্লান্তি
- মাঝে মধ্যেই জ্বর ইত্যাদি
এই উপসর্গগুলি দেখেই যদি চিকিৎসককে দেখিয়ে নেওয়া যায়, তাহলে কিছু সাধারণ পরীক্ষাতে ধরা পড়তে পারে ফুসফুসের ক্যান্সার। চিকিৎসক অর্পণ চক্রবর্তী জানালেন, আগেরকার ট্রিটমেন্ট প্রোটোকলে, একজনের ফুসফুসের ক্যান্সার ধরা পড়লে হয়ত ৫ বছরে তার বেঁচে থাকার হার হত ৪ থেকে ৫ শতাংশ। কিন্তু এখন বিষয়টা অনেকটাই বদলে গিয়েছে। ছড়িয়ে পড়ার আগে যদি ফুসফুসের ক্যান্সার ধরা পড়ে, তাহলে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বেঁচে থাকার সম্ভাবনা থেকেই যায়। আর এই আর্লি স্টেজে ধরা পড়া তখনই সম্ভব যখন এই উপসর্গগুলি দেখেই কেউ পরীক্ষা করান। সিরিয়াল চেস্ট এক্স-রে করালে লাং ক্যান্সার ধরা পড়ে যায়। তাই সতর্ক থাকুন, ফুসফুসের ক্যান্সার আটকে দিন।