নয়াদিল্লি: কাশ্মীরে জঙ্গি হামলা নিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাত জারি। সীমান্তের নিরাপত্তার উপর বাড়তি জোর দেওয়া হচ্ছে। আর সেই আবহে এবার বাংলাদেশ থেকে হুমকি এল। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূসের সহযোগী ভারতের উত্তর-পূর্ব অংশ দখলের ডাক দিলেন। এব্যাপারে চিনের সাহায্য় নেওয়া হতে পারে বলেও জানালেন তিনি। (India-Bangladesh Relations)
বাংলাদেশ সেনার প্রাক্তন আধিকারিক, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ফজলুর রহমান এই মন্তব্য করেছেন। বর্তমানে ইউনূসের মুখ্য় উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন ফজলুর। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে বিতর্কিত মন্তব্য করেন তিনি। লেখেন, ‘ভারত পাকিস্তাকে আক্রমণ করলে, বাংলাদেশের উচিত হবে উত্তর-পূর্ব ভারতের সাত রাজ্য দখল করে নেওয়া। এব্যাপারে যৌথ সামরিক ব্যবস্থা নিয়ে চিনের সঙ্গে আলোচনা শুরু করা প্রয়োজন বলে মনে করি’। (Muhammad Yunus)
২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে ফজলুরকে National Independent Commission-এর চেয়াম্যান নিযুক্ত করে ইউনূস সরকার। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ রাইফেলসের বিদ্রোহ এবং হত্যাকাণ্ড নিয়ে তদন্তের দায়িত্ব পান ফজলুর। বর্তমানে ইউনূসের মুখ্য উপদেষ্টাও তিনি। স্বভাবতই তাঁর মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছে। আর তাতে ফজলুরের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছে ইউনূস সরকার। দেশের বিদেশমন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয় শুক্রবার, যাতে বলা হয়, ‘ওই মন্তব্যের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের নীতির কোনও মিল নেই। বাংলাদেশ সরকার কোনও ভাবেই ওই মন্তব্যকে সমর্থন করে না’। এই ধরনের মন্তব্য করা থেকেও বিরত থাকতে বলা হয় সকলকে।
বাংলাদেশ সরকার জানিয়েছে, প্রত্যেক দেশের সার্বভৌমিকতা, আঞ্চলিক অখণ্ডতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পক্ষে তারা। কিন্তু ফজলুরের মন্তব্য নিয়ে কাটাছেঁড়া শুরু হয়েছে কূটনৈতিক স্তরে। কারণ এর আগে, চিন সফরে গিয়ে এমন মন্তব্য করতে শোনা যায় খোদ ইউনূসকেও। সেই সময় ইউনূস জানান, ভারতের উত্তর-পূর্বের সাতটি রাজ্য স্থলভাগ দিয়ে ঘেরা। তাদের কাছে সমুদ্রে যাওয়ার রাস্তা বাংলাদেশ। বাংলাদেশ সেই নিরিখে অভিভাবকের ভূমিকা পালন করছে। তাই চিনের কাছে অর্থনৈতিক প্রসার ঘটানোর রাস্তা রয়েছে। চিন বাংলাদেশ পণ্য উৎপাদন থেকে বিক্রি, বাংলাদেশের মাধ্যমে পণ্য আমদানি এবং অন্যত্র রফতানিও করতে পারে।
এমনিতেই চিনের সঙ্গে সীমান্ত সংঘাত রয়েছে ভারতের। তাই ইউনূসের ওই মন্তব্য ঘিরেও বিতর্ক মাথাচাড়া দেয়। প্রশ্ন ওঠে, ভারতের বিরুদ্ধে তাহলে কি চিনা আগ্রাসনে ইন্ধন জোগাচ্ছেন ইউনূস? এর ঠিক পর পরই ভারতের মাটির উপর দিয়ে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। তার পরও ফজলুর যে মন্তব্য করলেন, তাতে অশনি সঙ্কেত দেখছেন অনেকেই। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক ক্রমশ বন্ধুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তাই পাকিস্তান এবং চিনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বাংলাদেশ ভারতকে জব্দ করতে চাইছে কি না, উঠছে প্রশ্ন।