বীজপুর : বিজেপি নেতা তথা মুকুল রায়ের পুত্র শুভ্রাংশু রায়ের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ঘিরে জল্পনা। ফেসবুক-পোস্টে শুভ্রাংশু লিখেছেন, "জনগণের সমর্থন নিয়ে আসা সরকারের সমালোচনার আগে বেশি প্রয়োজন আত্মসমালোচনার।" 


বিজেপি নেতা হয়েও রাজ্য সরকারের সমালোচনার ক্ষেত্রের দলের অবস্থান নিয়ে শুভ্রাংশুর এই কটাক্ষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। প্রসঙ্গত, মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে কাজে যোগদানের নির্দেশ সহ বিভিন্ন ইস্যুতে রাজ্য সরকারের সমালোচনায় সরব হয়েছেন বিজেপি নেতারা। এই রকম একটা পরিস্থিতিতে শুভ্রাংশু দলের মধ্যে আত্মসমালোচনার কথা বলায় স্বাভাবিকভাবেই জল্পনা শুরু হয়েছে। যদিও শুভ্রাংশুর প্রতিক্রিয়া, ‘যা লিখেছি, নিজেই লিখেছি।’


রাজনীতির রং দেখে ইয়াসের ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে বলে সম্প্রতি অভিযোগ করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, রাজনীতির রং দেখে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। যারা বিজেপি কর্মী তাদের ত্রাণ শিবিরে থাকতে দেওয়া হচ্ছে না। 


বিজেপি রাজ্য সভাপতির অভিযোগ প্রসঙ্গে জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী পুলক রায় বলেন, দিলীপবাবু অভিযোগ করার জন্য অভিযোগ করছেন। তাঁরা শুধু খবরে আছেন মানুষের পাশে নেই। আজকে ঘূর্ণিঝড় এবং কোটাল চলে যাওয়ার পর তাঁরা অভিযোগ করছেন। রাজ্য সরকার স্বচ্ছতার সঙ্গে দুয়ারে ত্রাণ প্রকল্পের কাজ করছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়া হবে। কোন দুর্নীতি হবে না।


এদিকে দুই রাজ্যের দুর্গত এলাকার পরিস্থিতি বৃহস্পতিবার আকাশপথে পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী।  এরপর পশ্চিম মেদিনীপুরের কলাইকুণ্ডায় তাঁর রিভিউ মিটিং করার জন্য পৌঁছে যান। পৌঁছান মুখ্যমন্ত্রীও। তার আগেই কলাইকুণ্ডায় পৌঁছে যান কেন্দ্রীয়মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী, রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়, বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও রাজ্যের সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র।  কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রিভিউ মিটিংয়ে যোগ দেননি মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আলাদা করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সময় চেয়ে রাজ্যে ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি সংক্রান্ত রিপোর্ট তুলে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কিছুক্ষণ কথা হয়। এরপর তিনি দিঘার উদ্দেশে রওনা দেন। মুখ্যমন্ত্রীর এই পদক্ষেপ নিয়ে সমালোচনায় সরব হন শুভেন্দু। তিনি বলেন, গতকাল যেভাবে প্রধানমন্ত্রীকে অপমান করেছেন , এই নিন্দার কোনও ভাষা নেই।


এরকমই একাধিক ইস্যুতে রাজ্য রাজনীতিতে শাসকশিবির ও বিজেপির সংঘাত লেগে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শুভ্রাংশর মন্তব্য রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। উল্লেখ্য, শুভ্রাংশ এবার বীজপুর আসন থেকে বিজেপির প্রার্থী ছিলেন। কিন্তু, তিনি পরাজিত হন।