মায়ানমারে ক্রমেই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা । ইতিমধ্যেই দেড় হাজারেরও বেশি দেহ উদ্ধার হয়েছে। আরও বহু প্রাণহীন দেহ আটকে ধ্বংসস্তূপের নিচে। আশঙ্কা করছেন উদ্ধারকারীরা। ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজির রিপোর্ট অনুযায়ী, সেদিন রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৭। তার ঠিক ১২ মিনিটের মাথায় ফের কম্পন! এবার কম্পনের মাত্রা ৬.৪। তারপর আবারও রাতের দিকে কেঁপেছে মান্দালয়। এক মার্কিন ভূ- বিজ্ঞানীর মতে, মাটির নিচে এই ভূমিকম্পে যে ব্যাপক পরিমাণ শক্তি নির্গত হয়েছে, তা ৩৩৪টি পরমাণু বোমার শক্তির সমান। এই বিরাট মাপের কম্পনে মৃতের সংখ্যা যে কোথায় গিয়ে থামবে, তা ভাবতেই শিউরে উঠছেন উদ্ধারকারীরা।
নমাজের সময়ই মৃত্যু
সোমবার ইদ। আর তার আগে শুক্রবারই এই ভয়াবহ ভূমিকম্প ঘটে। ইন্ডিয়া টু-ডে তে প্রকাশ, একটি মুসলিম সংগঠন জানিয়েছে, পবিত্র রমজান মাসে শুক্রবারের নামাজের সময় এদিন মায়ানমারে প্রাণ হারিয়েছেন ৭০০ জনেরও বেশি। স্প্রিং রেভলিউশন মায়ানমার মুসলিম নেটওয়ার্কের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য তুন কি সোমবার জানান,সে-দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ে ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রায় ৬০টি মসজিদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোনও কোনওটি একেবারে ধ্বংস হয়ে গেছে। রমজান মাসে এই ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে প্রাণ হারিয়েছেন নমাজরত বহু মানুষ।
বেশিরভাগ মসজিদই পুরনো
ইন্ডিয়া টু-ডে তে প্রকাশ, ইরাবতী অনলাইন নামক নিউজ সাইটে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা গিয়েছে ভূমিকম্পের সময় বেশ কয়েকটি মসজিদ ভেঙে পড়েছে। মানুষ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। তুন কি আরও বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত বেশিরভাগ মসজিদই পুরনো । ফলে ভূমিকম্পের অভিঘাত সহ্য় করতে পারেনি। তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে।
এখনও বহু মানুষ নিখোঁজ
সোমবারের তথ্য অনুসারে, মায়ানমারে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১,৭০০ ছাড়িয়েছে। ধ্বংসস্তূপ থেকে মৃতদেহর পর মৃতদেহ উদ্ধার হয়েই চলেছে। মায়ানমারের সরকারের মুখপাত্র মেজর জেনারেল জাও মিন তুন রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম এমআরটিভিকে বলেছেন আহতের সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন হাজার। এখনও বহু মানুষ নিখোঁজ।
মার্কিন ভূ- বিজ্ঞানী সতর্ক করেছেন, শুক্রবারের ভূমিকম্পের পর যা পরিস্থিতি তাতে আবারও নড়ে উঠতে পারে মান্দালয়। মায়ানমারে ভূমিকম্পের প্রবণতা চলতে পারে কয়েক মাস ধরে । সে-দেশের মাটির নিচে ইন্ডয়ন টেকটোনিক প্লেট ও ইউরেশিয়ান প্লেটের সঙ্গে ক্রমাগত সংঘর্ষ চলছেই। আর তার ফল হতে পারে মারাত্মক।