কলকাতা: নারদ মামলায় রাজ্যের দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র, কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতারের দিন কলকাতায় সিবিআইয়ের অফিস নিজাম প্যালেসের বাইরে বিক্ষোভের ঘটনা মামলা রুজু পুলিশের। অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। হিংসা ছড়ানো, অবৈধ জমায়েত সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। জানা গেছে, ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৭, ১৪৮, ১৪৯ ধারায় মামলায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় বাহিনীর লাঠিচার্জ। পাল্টা তৃণমূল কর্মীদের ইঁট-বৃষ্টি।মুহুর্মুহু নিজাম প্যালেসের ভিতরে ধেয়ে আসে পাথর। ছোড়া হয় বোতল, জুতো।
গেট ধরে টানাটানি, লাথি মেরে গেট ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা তৃণমূল কর্মীদের। তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের হামলার মুখে কার্যত পিছু হঠেন নিজাম প্যালেসের গেটে মোতায়েন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা।সোমবার সকাল থেকে দফায় দফায় রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় নিজাম প্যালেস চত্বর। সোমবার সকালে তৃণমূলের দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, বিধায়ক মদন মিত্র ও কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে নিজাম প্যালেসে আনার পরই, উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। বেলা বাড়তেই নিজাম প্যালেসে হাজির হন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরেই কাতারে কাতারে বাইরে জড়ো হতে থাকে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। দলীয় পতাকা নিয়ে শুরু হয় স্লোগান।যত সময় এগোতে থাকে, তত বাড়তে থাকে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের ভিড়।
করোনায় যখন ছারখার দেশ... ছারখার রাজ্য... তখন কাতারে কাতারে কর্মী সমাগম। ধাক্কাধাক্কি... বেশিরভাগেরই মুখে ছিল না মাস্ক।
এই পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে নিজাম প্যালেসের সামনের রাস্তা বন্ধ করে দেয় পুলিশ।লকডাউনের স্তব্ধ শহর, আচমকা তৃণমূল কর্মীদের বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে রাজ্য ও কলকাতা পুলিশ। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয়, যে, গ্রেফতার হওয়া মন্ত্রী-বিধায়কদের কোর্ট প্রডাকশনের জন্য নিজাম প্যালেসের বাইরে আনা প্রায় অসম্ভব হয় পড়ে। ভার্চুয়াল প্রডাকশনের আবেদন জানায় সিবিআই।
ভয়ঙ্কর মহামারী... মৃত্যুমিছিল... রাজ্যজুড়ে চলছে লকডাউন। তারই মধ্যে এই এই বিক্ষোভ...অশান্তি চলে। এই প্রেক্ষিতে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ট্যুইট করেন, প্রত্যেকের কাছে অনুরোধ, আইন মেনে চলুন। বাংলার মানুষের স্বার্থে এমন কিছু করবেন না যাতে লকডাউন পরিস্থিতিতে বিধি ভঙ্গ হয়। বিচারবিভাগের প্রতি সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে। আইনি পথেই লড়াই হবে। এদিকে, যথারীতি রাজ্যপালের টুইটার হ্যান্ডেলে একের পর ট্যুইট আসতে থাকে। প্রত্যেকটিতেই নিশানায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। প্রথম ট্যুইট সোমবার দুপুর ১টা ১৫-এ। জগদীপ ধনকড় লেখেন, রাজ্যে নৈরাজ্য চলছে। আইনের শাসন নেই। পুলিশ ও প্রশাসন নীরব। সাংবিধানিক ব্যবস্থা ও আইনের শাসন না থাকলে, কী অবস্থা তৈরি হয়, তা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন। যে বিস্ফোরক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, প্রতিমুহূর্তে তা আরও খারাপ হচ্ছে। এই পরিস্থিতি এখনই নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। ৯মিনিটের আরও একটি টুইট। টিভি চ্যানেল ও সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখেছি, আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ হচ্ছে। CBI অফিসে পাথর ছোড়া হচ্ছে। এটা হতাশাজনক যে, কলকাতা পুলিশ ও রাজ্য পুলিশ দর্শকের ভূমিকায়। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন, আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পদক্ষেপ করুন। ৫ মিনিট পর ফের ট্যুইট। এবার আরও বেশি নিশানায় রাজ্য ও কলকাতা পুলিশ। টিভি চ্যানেল ও সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখেছি, আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ হচ্ছে। CBI অফিসে পাথর ছোড়া হচ্ছে। এটা হতাশাজনক যে, কলকাতা পুলিশ ও রাজ্য পুলিশ দর্শকের ভূমিকায়। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন, আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পদক্ষেপ করুন।
এদিন নিজাম প্যালেসের বাইরে বিক্ষোভের ঘটনায় এফআইআর দায়ের করল পুলিশ।