সঞ্চয়ন মিত্র, কলকাতা: প্রয়াত বাংলা কমিক্সের প্রবাদপ্রতিম স্রষ্টা নারায়ণ দেবনাথ (Narayan Debnath Demise)। পরিবারের লোকজনের পাশে দাঁড়াতে হাসপাতালে হাজির হয়েছেন কলকাতার মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim), এসেছেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায়ও (Arup Roy)। শেষকৃত্য কীভাবে হবে সেই নিয়ে পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করছেন তাঁরা।


প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে বেলভিউ নার্সিংহোম থেকে শিল্পীকে শেষযাত্রায় নিয়ে যাওয়া হবে শিবপুরে (Shibpur)। নারায়ণ দেবনাথের শিবপুরের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে তাঁকে। হাওড়ার (Howrah) বাড়ি হয়ে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হবে শিবপুর শ্মশানে। করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে আপাতত খবর। এছাড়া আর কোথাও শেষযাত্রায় শিল্পীকে নিয়ে যাওয়া হবে কি না সেই নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি এখনও। এছাড়া হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে যে সকাল সোয়া দশটা নাগাদ তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। ফলে দুপুর ১টার পরেই শেষযাত্রা শুরু হবে বলে জানা যাচ্ছে। 


আরও পড়ুন: Narayan Debnath Passes Away: নারায়ণ দেবনাথের নিষ্ঠার কোনও তুলনা নেই: শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়


দীর্ঘদিন ধরেই প্রখ্যাত শিল্পীর চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন স্মরজিৎ নস্কর। ইদানিং তাঁকেও বাঁটুলের স্রষ্টা বলতেন অনেক কথা। আসলে দীর্ঘদিন রোগের সঙ্গে লড়াই জারি রেখেছেন। বারবার খারাপ অবস্থার মধ্যে থেকেই ফিরেছেন রোগ জয় করে। এবারও হয়ত ফিরে আসবেন, বিশ্বাস ছিল তাঁর। তাই পৃথিবীর সঙ্কটকালে শিল্পীপ বড় সাধ ছিল, এই করোনা নামক ভয়ানক শত্রুটাকে ঘায়েল করাবেন বাঁটুলকে দিয়েই। সেই স্বপ্নই দেখতেন। চিকিৎসককে বলেছিলেন, ' এবার বাঁটুলকে দিয়ে করোনাকে হারাতে হবে ' 


কিন্তু তা আর হল কই। চলে গেলেন প্রবাদপ্রতিম শিল্পী। পড়ে রইল এই সব কিছু, পড়ে রইল ইতিহাস। দিকশূন্যপুরে পাড়ি দিলেন শিল্পী। তবু হাঁদা-ভোঁদা, বাঁটুল, নন্টে ফন্টের মধ্যেই রয়ে যাবেন তিনি। পরিবার সূত্রে খবর, ২০১৭ সাল পর্যন্ত ‘হাঁদা ভোঁদা’ এঁকেছেন শিল্পী। অনেকে বলেন, একক লেখক-শিল্পীর তৈরি, বিশ্বের সবচেয়ে বেশিদিন ধরে চলা কমিক স্ট্রিপ ‘হাঁদা ভোঁদা’। কমিকসের পথে বদল এসেছে বাঁটুলের চেহারাতেও। যত দিন গিয়েছে কোমর আর পা সরু হয়েছে বাঙালির এই সুপারহিরোর। চওড়া হয়েছে ছাতি। ষাটের দশকে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পটভূমিকায় বদল আসে কাহিনিতে। বাঁটুলকে যুদ্ধের কাজে লাগান শিল্পী। শত্রুসেনার ট্যাঙ্ক, প্লেন হেলায় ধ্বংস করে সে। তুমুল জনপ্রিয় হয় বাঁটুল দি গ্রেট।