নয়াদিল্লি : বেজে গেল G-20 সম্মেলন শুরুর ঘণ্টা। অনুষ্ঠান সূচিত হল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভাষণ দিয়ে। শুরুতেই তিনি মরক্কোয় ঘটে যাওয়া ভূমিকম্পের ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন। বলেন, ' আমরা এই কঠিন সময়ে মরক্কোর পাশে আছি। ' 


এরপর G-20 র শীর্ষ সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জি-২০-এর স্থায়ী সদস্য হিসেবে আফ্রিকান ইউনিয়নের প্রধানকে তার আসন গ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানান। উদ্বোধনী ভাষণেই তিনি উল্লেখ করেন, দিল্লিতে আড়াই হাজার বছর পুরনো একটি স্তম্ভে লেখা রয়েছে মানবজাতির কল্যানের কথা। এই সম্মেলনের মাধ্যমে সেই বার্তা আরও বেশি করে বাস্তবায়িত করার জন্য উপস্থিত সকলের কাছে আবেদন জানান প্রধানমন্ত্রী। 


G 20 সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন ''আজ, G 20-এর প্রেসিডেন্ট হিসাবে, ভারত বিশ্বকে জানাতে চায়, এখন সময় এসেছে, সকলের একসঙ্গে চলার৷'' এদিন ফের একবার তাঁর মুখে শোনা গেল 'সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস, সবকা প্রয়াস' মন্ত্র । তিনি মনে করেন, এই মুহূর্তে এই মন্ত্রই সারা বিশ্বকে আলো দেখাতে পারে।  তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে যে বিশ্বাসের সঙ্কট তৈরি হয়েছিল, যুদ্ধ সেই ক্ষতকে আরও গভীর করেছে। আমরা যদি করোনাকে হারাতে পারি, তাহলে এই সঙ্কটও আমরা কাটিয়ে উঠতে পারব। 'সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ মন্ত্রই আমাদের পরিচালিত করবে, মন্তব্য প্রধানমন্ত্রী মোদির। 


তিনি বলেন, সমস্যা যাই হোক না কেন, উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে বিভাজন হোক কিংবার পূর্ব ও পশ্চিমের দূরত্ব, খাদ্য ও জ্বালানি ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সমস্যা হেক বা সন্ত্রাস, বা সাইবার নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, জ্বালানি বা জল সুরক্ষা - আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য সব সমস্যার নিশ্চিত সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।


মোদি আরও বলেন, ভারতে ৬০টির বেশি শহরে ২০০-র বেশি বৈঠক হয়েছে জি ২০ নিয়ে। 'সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’  এই ভাবনাকে সঙ্গী করেই ভারত চেয়েছিল যেন আফ্রিকান ইউনিয়নকে  জি ২০-র সদস্যপদ দেওয়া যায়। তিনি বলেন, আশা করি এতে সবার সমর্থন রয়েছে।   

এদিকে উল্লেখযোগ্যভাবে, G-20 সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর আসনের সামনে দেখা গেল দেশের নাম ইংরেজিতে লেখা আছে ভারত। ভারত ও ইন্ডিয়া, এই নাম- বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছিল রাষ্ট্রপতির সম্মানে আয়োজিত এই সম্মেলনের নৈশভোজের আমন্ত্রণ পত্র ঘিরেই। এদিন আন্তর্জাতিক মঞ্চে বিশ্ব নেতাদের সামনে প্রধানমন্ত্রী দেশের নাম সরকারিভাবে ভারত বলে পরিচয় করিয়ে দেওয়ায় নতুন করে জল্পনা তৈরি হল।


দিল্লির প্রগতি ময়দানের ভারত মণ্ডপম কনভেনশন সেন্টারে শনিবার থেকে শুরু হল G-20 সম্মেলন। সকাল থেকেই ছিল সাজো সাজো রব। একে একে পৌঁছচ্ছেন রাষ্ট্রপ্রধানরা। এসে পৌঁছেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী, ইতালির প্রধানমন্ত্রী, বাংলা দেশের প্রধানমন্ত্রী প্রমুখ। 

প্রথমবার ভারত এই আন্তর্জাতিক ইভেন্টের আয়োজক। প্রথম পর্যায়ে আলোচনার বিষয় হল 'ওয়ান আর্থ'। এরপর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা, জার্মান চ্যান্সেলর ওলফ স্কোলজ এবং ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন মোদি। দ্বিতীয় পর্যায়ে আলোচনার বিষয় হবে 'ওয়ান ফ্যামিলি'।


আলোচনা শেষে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর আমন্ত্রণে নৈশভোজে যোগ দেবেন রাষ্ট্রনেতারা। নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-কে। নৈশভোজে যোগ দিতে দিল্লি গেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। যদিও, G-20 সম্মেলনে ডাক পাননি কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে।