নয়াদিল্লি: দেশের ৭১তম স্বাধীনতা দিবসে মঙ্গলবার সকালে নয়াদিল্লির লালকেল্লা থেকে জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের সুফল সম্পর্কে কী বলেন, তা জানতে আগ্রহী ছিলেন অনেকেই। মোদীর স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে থাকল নোট বাতিলের প্রসঙ্গ। তিনি বললেন, কালো টাকার বিরুদ্ধে সংগ্রাম চলবে। তিনি বলেছেন, নোট বাতিলের পর ব্যাঙ্কে জমা পড়া ১.৭৫ লক্ষ কোটি টাকা নজরদারির আওতায় রয়েছে। একইভাবে হিসাব-বহির্ভূত আয়ের জন্য ১৮ লক্ষ লোকও নজরদারিতে রয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৪.৫ লক্ষ মানুষ হিসাববহির্ভূত আয়ের কথা স্বীকার করে ‘ভুল সংশোধন’ করতে চেয়েছেন।


প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, গত ৮ নভেম্বর ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের পর  আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন কমপক্ষে ২ লক্ষ কোটি টাকা ব্যাঙ্কিং সিস্টেমে এসেছে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, নোট বাতিলের জেরেই আয়কর রিটার্নের সংখ্যা  দ্বিগুণ বেড়ে ২২ লক্ষ থেকে ৫৬ লক্ষ হয়েছে। এছাড়াও ৩ লক্ষ ভুয়ো বা কাগুজে কোম্পানির হদিশও মিলেছে। আর্থিক বেনিয়মের জন্যই এই কোম্পানিগুলিকে ব্যবহার করা হত।

মোদী বলেছেন, নিরপেক্ষ সমীক্ষা অনুসারে ব্যাঙ্কিং সিস্টেমে প্রায় ৩ লক্ষ কোটি হিসাববহির্ভূত অর্থ ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হয়েছে নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত।

এদিন মোদীর ভাষণের অধিকাংশ সময় জুড়েই ছিল কালো টাকার ইস্যু। তিনি বলেছেন, নোট বাতিলের পর যাঁরা হিসেব বহির্ভূত অর্থ ব্যাঙ্কে জমা দিয়েছেন, তাঁরা নজরদারির আওতায় পড়েছেন। নোট বাতিলের পর যত পরিমাণ টাকা জমা পড়েছে তার মধ্যে ১.৭৫ লক্ষ কোটি টাকা নজরদারির আওতায় পড়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নোট বাতিলের ফলে নতুন করে কালো টাকা তৈরি হওয়াতেও রাশ টানা গিয়েছে।

কালো টাকা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চলবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই লক্ষ্যে প্রযুক্তির ব্যবহার এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও ইনকাম ট্যাক্স জমা দেওয়ার সঙ্গে আধার যুক্ত করার প্রচেষ্টা সার্থক হয়েছে।

মোদী বলেছেন, স্বল্প সময়ের মধ্যে সরকার ৮০০ কোটি টাকার বেশি বেনামি সম্পত্তি বা সম্পদ উদ্ধার করেছে।

মোদী আরও বলেছেন, যারা দেশ ও গরিব জনতাকে লুঠ করেছে তারা শান্তিতে ঘুমোতে পারবে না। আজ সততার উদযাপন হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, প্রযুক্তিই স্বচ্ছতা আনবে। ডিজিটাল লেনদেন গুরুত্ব দিতে জনগনের কাছে আর্জি জানিয়েছেন তিনি।

মোদী বলেছেন, গত তিন বছরে ১.২৫ লক্ষ কোটি টাকার হিসাববহির্ভূত সম্পদ চিহ্নিত করা হয়েছে।

কালো টাকা উদ্ধারের লক্ষ্যেই নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বলে উল্লেখ করে মোদী বলেছেন, এর ফলে কালো টাকা মূল স্রোতে ফিরিয়ে এনেছে। ওই কালো টাকা ব্যাঙ্কে ফিরিয়ে এনে তা অর্থনীতির মূলধারার সঙ্গে যুক্ত করাই ছিল সরকারের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য সফল হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, নোট বাতিলের ফলে ব্যাঙ্কে টাকা এসেছে। এরফলে ঋণে সুদের হার কমেছে। দরিদ্রদের স্বল্প সুদে ঋণ দিচ্ছে ব্যাঙ্কগুলি। এতে দেশের অর্থনীতিরই লাভ হয়েছে।