ভোপাল: মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপালের একেবারে কেন্দ্রস্থলে, কার্যত শহরের সবথেকে ব্যস্ত এলাকায় ৩ ঘণ্টা ধরে ধর্ষিত হতে হল এক কলেজ ছাত্রীকে। তবে ধর্ষণ  টানা চলেনি। অভিযুক্ত ৪ জন মাঝে মাঝে উঠে গিয়ে চা খেয়েছে, গুটখা খেয়েছে। তারপর আবার এসে লিপ্ত হয়েছে ধর্ষণে।


ভোপালের হাবিবগঞ্জ এলাকার খুব কাছে একটি সেতুর নীচে ঘটেছে এই ঘটনা। চারপাশে একাধিক ব্যস্ত রাস্তা, দোকান পসার, রেল লাইন, কিছু দূরেই আরপিএফ পোস্ট। কিন্তু তাঁর চিৎকার কেউ শোনেনি। মেয়েটির বাবা মা দুজনেই পুলিশে চাকরি করেন, তাঁর বাবা বাহিনীর সাব ইন্সপেক্টর, মা রয়েছেন সিআইডিতে। অথচ পুলিশও তাঁর অভিযোগ নিতে চায়নি। বরং হেসে বলেছে, তিনি সিনেমার গল্প ফেঁদেছেন।

ভয়ানক এই গণধর্ষণ কাঁপিয়ে দিয়েছে ভোপালকে। অভিযোগকারিণী ১৯ বছরের তরুণী ইউপিএসসির প্রস্তুতি নিচ্ছেন। প্রতিদিন বাড়ি থেকে এক ঘণ্টার রাস্তা যান তিনি চাকরির কোচিং ক্লাসে। মঙ্গলবার সন্ধে ৭টা নাগাদ কোচিং ক্লাসের পর হাবিবগঞ্জ স্টেশনের দিকে তিনি হেঁটে যাচ্ছিলেন। তখন গোলু বিহারী চাধর নামে নিজের শিশুকন্যার হত্যায় অভিযুক্ত, জামিনে থাকা এক ব্যক্তি তাঁর পথ আটকায়। হাত ধরে টানার চেষ্টা করলে মেয়েটি তাকে লাথি মেরে ফেলে দেন। এরপর সে ডেকে আনে অমর ঘুন্টু নামে আরও একজনকে। এরা আবার সম্পর্কে ভায়রা ভাই। তারা তাঁকে একটি নালার দিকে টেনে নিয়ে যেতে থাকে। মেয়েটি দুজনের সঙ্গেই ধস্তাধস্তি করতে করতে তাদের একটি পাথর দিয়ে মারেন। এরপর তারাও তাঁকে পাথর দিয়ে মেরে জখম করে ফেলে। বেঁধে ফেলে শুরু হয় ধর্ষণ। মিনিট ১৫ পরে গোলু উঠে যায় গুটখা আর সিগারেট আনতে। অমর নজর রাখে। গোলু ফেরে, সঙ্গে আরও দুজন- রাজেশ ও রমেশ। তারাও উপর্যুপরি ধর্ষণ করে মেয়েটিকে। এভাবে চলে রাত ১০টা পর্যন্ত। অবশেষে ছাড়া পান মেয়েটি, তবে তাঁর দুল, ঘড়ি আর ফোন তুলে দিতে হয় ধর্ষকদের হাতে।

কোনওক্রমে হাবিবগঞ্জ স্টেশনের আরপিএফ ছাউনিতে হেঁটে যান মেয়েটি। বাবা মাকে ফোন করেন। মেয়ের অবস্থা দেখে তাঁকে বাড়ি নিয়ে যান বাবা। পরদিন বাড়ির লোক তাঁকে নিয়ে যান এমপি নগর পুলিশ স্টেশনে। সেখান থেকে তাঁদের পাঠানো হয় হাবিবগঞ্জ পুলিশ স্টেশনে, তারা পাঠায় হাবিবগঞ্জ জিআরপিতে। সেখানে পুলিশ তাঁকে ঠাট্টা করে বলে, সিনেমার গল্প বানিয়েছেন তিনি।

ঘটনা এখানেই শেষ নয়। হাবিবগঞ্জ থেকে ফেরার সময় ধর্ষণের ঘটনাস্থল থেকে ৫০০ মিটারের মত দূরে ২ ধর্ষক অমর ও গোলুকে দেখতে পান মেয়েটি। পুলিশ কর্মী বাবা মা ও মেয়েটি নিজে ছুটে গিয়ে তাদের ধরে ফেলেন, তুলে দেন জিআরপির হাতে। এরপর অভিযোগ নিতে বাধ্য হয় পুলিশ। অভিযোগ গ্রহণ না করার জন্য সাসপেন্ড করা হয় এমপি নগর পুলিশ স্টেশনের সাব ইন্সপেক্টর আর এন টেকামকে।