মুম্বই:  এক কোটি টাকার মুক্তিপণ আদায় করতে সাড়ে তিন বছরের মেয়েকে খুন করল অপহরণকারীরা। মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটেছে মুম্বইতে। আরও চাঞ্চল্যকর বিষয় হল, অপহরণকারী দুজনই নাবালক! বয়স যথাক্রমে ১৬  এবং ১৭ বছর! তাদের আটক করেছে পুলিশ।


পুলিশ সূত্রে খবর, গতকাল রাতে নাগপদ এলাকার অন্তর্গত কাজিরপুরার হাজি কসম চাউল থেকে ছোট শিশুকন্যাটির টুকরো টুকরো করে কাটা দেহ উদ্ধার হয়।


তারপরই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসে। জানা যায়, গত ৫ ডিসেম্বর থেকে ডোনকান রোডের শরবতওয়ালা বিল্ডিংয়ের বাসিন্দা শিশুটি নিখোঁজ ছিল। এরজন্য ওইদিনই জে জে মার্গ পুলিশ স্টেশনে ডায়রি দায়ের করেছিল শিশুর পরিবার।


তদন্তে জানা যায়, প্রতিবেশী এক কিশোর শিশুটির বাবা-মাকে তার অপহৃত হওয়ার খবর দিয়েছিল। এই তথ্য পাওয়ার পরই ওই কিশোরের ওপর নজর রাখতে শুরু করে পুলিশ।


এরমধ্যে, শিশুর বাবার কাছে অজ্ঞাত পরিচয় কোনও ব্যক্তির থেকে দিন কয়েক আগে একটি ফোন আসে। মেয়েটির মুক্তিপণ বাবদ এক কোটি টাকা দাবি করে তারা।


কিন্তু সে টাকা দেওয়ার ক্ষমতা ছিল না শিশুকন্যার বাবা-মায়ের। অবশেষে ২৮ লক্ষ টাকা দিতে রাজি হন মেয়েটির বাবা। এরপর মেয়েটির বাবাকে নগদ নিয়ে থানের কালওয়ার এলাকায় আসতে বলে অপহরণকারীরা।


কিন্তু, অপহরণকারীরা সেখানে পৌঁছয়নি। এরপরই, প্রায় ১৫ দিন নজর রাখার পর, মোবাইল ফোনের কল ট্রেস করে প্রতিবেশী কিশোরকে আটক করে পুলিশ।


তাকে জেরা করতেই এক হাড়-হিম করা ষড়যন্ত্রের হদিস পায় পুলিশ। জেরায় সেই নাবালক স্বীকার করে, সে এবং তার এক বন্ধু মিলে ওই শিশুকন্যাকে অপহরণ করেছিল।


সে বলে, যেদিন অপহরণ করা হয়, সেদিনই মোবাইল ফোনের চার্জার গলায় জড়িয়ে মেয়েটিকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। তারপর শিশুটির দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলে ওই দুই নাবালক।


প্রতিবেশী নাবালকের থেকে খোঁজ নিয়ে সঙ্গী কিশোরকেও আটক করে পুলিশ। তারা জানায়, শিশুটিকে অপহরণ করার ফন্দি বেশ কিছুদিন ধরেই তারা করেছিল।


গত ৫ তারিখ, মেয়েটির পরিবার নমাজ পড়তে গেলে, সেই ফাঁকে তারা শিশুকে অপহরণ করে। অপহরণ করে তারা উল্টেদিকের বাড়িতে শিশুকন্যাকে আটকে রেখেছিল। কিন্তু, ভয় পেয়ে তারা তাকে খুন করে।


এখানেই শেষ নয়। এরপর জাল নথি দেখিয়ে একটি সিমকার্ডও কেনে তারা। তারপর পেশায় প্লাইউডের ব্যবসায়ী মেয়েটির বাবাকে মুক্তিপণের জন্য ফোন করে।


দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধেই খুনের মামলা শুরু হয়েছে। শিশুটির দেহ ময়নাতদন্তের জন্যে পাঠানো হয়েছে।