নয়াদিল্লি: হাতে ছিল একটা বার্বি ডল। তার সঙ্গেই কথা বলছিল মেয়েটা। আর কথার ফাঁকেই উঠে আসছিল তার ৫ বছরের জীবনের কিছু মর্মান্তিক সত্য।

বার্বি ডলের সঙ্গে কথা বলতে বলতে ছোট্ট মেয়েটা আদালতকে জানিয়ে দিল, কী হয়েছে তার সঙ্গে। পুতুলের শরীর ছুঁয়ে সে বোঝাল, কীভাবে এই বয়সেই বিকৃত মনস্কের যৌন লালসার শিকার হতে হয়েছে তাকে।

দিল্লি হাইকোর্ট খেলার ছলে তার সেই বয়ানকে আইনি স্বীকৃতি দিয়েছে, জেলের সাজা দিয়েছে অপরাধীকে।

বিচার চেয়ে মায়ের হাত ধরে ট্রায়াল কোর্টে আসা ছোট্ট মেয়েটি বিপক্ষের আইনজীবীর আপত্তিকর প্রশ্নের কোনও জবাবই দিচ্ছিল না। তাই বিচারক তার হাতে তুলে দেন ওই বার্বি ডল। তারপরেই পুতুলের গোপনাঙ্গ ছুঁয়ে সে জানিয়ে দেয়, তার সঙ্গে কী ঘটেছে।

২০১৪-র জুলাইতে ১০ বছরের দাদার সঙ্গে স্কুলে যাচ্ছিল ওই শিশু। তখন দাদাকে ১০ টাকা দিয়ে অপরাধী তাকে কিছু একটা কিনে আনতে বলে। সেই ফাঁকে বাচ্চাটিকে নিয়ে চম্পট দেয় সে। উত্তর পশ্চিম দিল্লির নারেলায় নিয়ে গিয়ে তার ওপর যৌন নির্যাতন চালায়, মারধর করে। তারপর বাড়ির কাছে ফেলে রেখে যায় তাকে। স্কুলের স্কার্ট না পরা অবস্থায় রাস্তায় মেয়েটিকে কাঁদতে দেখে এক প্রতিবেশিনী তাকে বাড়ি নিয়ে যান। প্রথমে কিছু না বললেও পরে মায়ের কাছে সে বলে সব কথা।

সেদিনে সেই ঘটনা তার ছোট্ট মনে ভয়াবহ প্রভাব ফেলেছিল। কথা বলা বন্ধ করে দেয় সে, বাবার সঙ্গেও ঘরে একা থাকতে রাজি হত না। সিসিটিভি ফুটেজের সাহায্যে অপরাধী হানিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

ট্রায়াল কোর্ট অপরাধীকে জেলের সাজা দেওয়ায় হাইকোর্টে যায় সে। তার বক্তব্য ছিল, শুধু ৫ বছরের এক শিশুর বয়ানের ওপর ভিত্তি করে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা অনুচিত। কিন্তু হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, পুতুলের সাহায্যে মেয়েটি যেভাবে আদালতে তার ওপর চলা অত্যাচারের কথা জানিয়েছে, তা অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই। ট্রায়াল কোর্টের রায় বহাল রেখেছে তারা।