আগরতলা: ত্রিপুরায় বড়সড় ভাঙন কংগ্রেসে। মানিক সরকারের রাজ্যে কংগ্রেসে ভাঙন ধরিয়ে মাথা তুলছে তৃণমূল কংগ্রেস। গতকাল প্রথম সারির কংগ্রেস নেতা জিতেন সরকার বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর আজ ত্রিপুরার ৬ জন বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস এমএলএ বিধানসভা স্পিকারকে চিঠি দিয়ে দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন।


সদ্য হয়ে যাওয়া পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল নিরঙ্কুশ প্রাধান্য নিয়ে ক্ষমতায় ফেরার পর ত্রিপুরা তাদের পরের টার্গেট, রাজনৈতিক মহলে এমন জল্পনা রয়েছে। সেই ধারনাই জোরদার হচ্ছে গত কয়েকদিনের ঘটনাবলীতে। গতকাল জিতেন সরকার বিধানসভা স্পিকার রমেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথের কাছে পদত্যাগপত্র দিয়ে কোনও কারণ জানাতে চাননি। এই সিদ্ধান্ত একান্ত ব্যক্তিগত, এর বেশি কিছু বলব না, মন্তব্য করেন তিনি। তবে তাঁর কাছে যে তৃণমূলে যোগদানের প্রস্তাব রয়েছে, সে কথা জানিয়েছিলেন আগেই।

আজ একেবারে একঝাঁক কংগ্রেস নেতা দল ছাড়ার কথা জানালেন। বিধানসভার পদত্যাগী বিরোধী দলনেতা সুদীপ রায় বর্মনের নেতৃত্বে তাঁরা স্পিকারের সঙ্গে দেখা করেন। এই দলে ছিলেন বিশ্ববন্ধু সেন, দিবা চন্দ্র রাংখল, আশিস সাহা। সরকারি সূত্রের খবর, আরও দুই কংগ্রেস বিধায়ক দিলীপ সরকার, প্রসেনজিত্ সিংহ রায় শারীরিক অসুস্থতার কারণে সেই দলে না থাকলেও ফোনে স্পিকারের সঙ্গে কথা বলে দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন।

অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, তিনি এই ছয় বিধায়কের সই করা চিঠি পেয়েছেন। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এই ছয় বিধায়ক কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। ছ’জনের সঙ্গেই আলাদা আলাদা ভাবে কথা বলে তাঁদের সই যাচাই করা হবে। দু’একদিনের মধ্যেই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন অধ্যক্ষ। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইনে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অধ্যক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছে ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস।

ঘটনাচক্রে ইতিমধ্যেই সুদীপবাবু তৃণমূল পরিষদীয় দল নেতা নির্বাচিত হয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোটে লড়তে কংগ্রেস-বাম আসন সমঝোতা মেনে নিতে না পেরে আগেই বিরোধী দলনেতার পদ ছাড়েন তিনি।

৬ বিধায়ক দল ছাড়ায় ৬০ আসন বিশিষ্ট ত্রিপুরা বিধানসভায় কংগ্রেসের মাত্র ৩ জনের প্রতিনিধিত্ব রইল। এদিকে আজ ফের ত্রিপুরা গিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়।

এদিকে জিতেন সরকার সিপিএমে যোগ দিচ্ছেন বলে দাবি করেছেন দলের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর। তিনি বলেছেন, জিতেনবাবু আগে সিপিএমেই ছিলেন। সিপিএমের টিকিটে ৫ বার বিধানসভা ভোটে জিতেছেন। ৯ বছর রাজ্য বিধানসভার স্পিকারও ছিলেন। তাঁকে দলে ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিজনবাবু।