নয়াদিল্লি: বাতিল নোটের প্রায় ৯৯ শতাংশ ফিরে এসেছে। এমনই জানাল ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বা আরবিআই।


এদিন, আরবিআইয়ের তরফে জানানো হয়েছে, নোট বাতিলের সময় যে পাঁচশো ও হাজারের নোট বাতিল করা হয়, তার মূল্য ছিল ১৫ লক্ষ ৪৪ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঘরে ফিরে এসেছে ১৫ লক্ষ ২৮ হাজার কোটি টাকার নোট। অর্থাৎ মাত্র ১৬ হাজার কোটি টাকার নোট রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঘরে ফেরেনি।


২০১৬-১৭ বার্ষিক রিপোর্ট প্রকাশ করে বুধবার শীর্ষ ব্যাঙ্কের তরফে জানানো হয়, নোট বাতিলের আগে প্রায় ৬৩২ কোটি পিস ১০০০ টাকার নোট বাজারে চালু ছিল। ডিমোনেটাইজেশনের পরবর্তী অধ্যায়ে এর মাত্র ১.৪ শতাংশ ফেরেনি। শীর্ষ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, ৮.৯ কোটি পিস ১০০০ টাকার নোট ফেরেনি। মূল্যের নিরিখে যা ৮৯০০ কোটি টাকা।


একইভাবে, আরবিআই জানিয়েছে, ২০১৭ সালের ৩১ মার্চের হিসেব অনুযায়ী পুরনো ও নতুন মিলিয়ে প্রায় ৫৮৮ কোটি পিস ৫০০ টাকার নোট বাজারে চালু ছিল। ২০১৬ সালের ৩১ মার্চের হিসেব অনুযায়ী, এই সংখ্যা ছিল ১৫৭০ কোটি পিস।


শীর্ষ ব্যাঙ্কের মতে, নোট বাতিল হওয়ার পর নতুন ২০০০ ও ৫০০ টাকার নোট ছাপতে ২০১৬-১৭ অর্থবর্ষে ৭,৯৬৫ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। তার আগের অর্থবর্ষে এই খাতে ৩,৪২১ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছিল। অর্থাৎ, নোট ছাপার খরচ দ্বিগুণ হয়েছে।


এর ফলে সর্বোচ্চ ব্যাঙ্কের আয় কমেছে ও খরচ বেড়েছে। আরবিআই জানিয়েছে, এই সময়ে আয় ২৩.৫৬ শতাংশ কমেছে। অন্যদিকে, খরচ ১০৭.৮৪ শতাংশ বেড়েছে। অর্থাৎ, দ্বিগুণের বেশি। ফলে, মোট লাভ অর্ধেক কমেছে।


আরবিআই-এর তথ্য প্রকাশের পর এদিন ফের একবার কেন্দ্রের নোট বাতিল করার সিদ্ধান্তের তুলোধনা করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইটারে তিনি লেখেন, আমার মনে হয় এটা পুরো ফ্লপ শো। তাঁর প্রশ্ন, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এই উদঘাটন বড় কেলেঙ্কারি ইঙ্গিত করছে নয় কি?


https://twitter.com/MamataOfficial/status/902910851077742592

দেশ থেকে কালো টাকা নির্মূল করতে গত বছরের ৮ নভেম্বর পুরনো ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সরকারের আশা ছিল, ৩ লক্ষ কোটি টাকা ফিরবে না।


কিন্তু, আরবিআই-এর হিসেব পুরো অন্য কথাই বলছে। আর এই নিয়ে মোদী সরকারকে একহাত নিয়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম। নোট বাতিল প্রক্রিয়াকে সুপারিশ করে আরবিআই নিজেদের লজ্জা ডেকে এনেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।


শুধু তাই নয়। মোদী সরকারের দাবি ছিল, নোট বাতিলের ফলে কালো টাকার পাশাপাশি দুর্নীতি ও জালনোটের রমরমাও বন্ধ হবে। কিন্তু, আরবিআই-এর দেওয়া তথ্য অন্য কথা বলছে। এদিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, প্রতি ১০ লক্ষ পুরনো ৫০০ টাকার নোটের মধ্যে ৭ পিস জালনোট বেরিয়েছে। অন্যদিকে, প্রতি ১০ লক্ষ পুরনো ১০০০ টাকার নোটের মধ্যে ১৯ পিস জালনোট বেরিয়েছে।